• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

কচুয়া মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি মুসলিম সমাজের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে

প্রকাশ:  ০৪ জুন ২০২৩, ০৯:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

২০২১ সালের ১০জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরকারি অর্থায়নে নির্মিত ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। ৫০টি মসজিদের মধ্যে কচুয়া উপজেলায় নির্মিত মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও রয়েছে। এ মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ১৩ কোটি টাকা। মসজিদটিতে ইসলামী সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি জ্ঞানার্জন ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে। প্রতিদিন শত শত ধর্মপ্রাণ মুসলমান উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নামাজ পড়তে আসে। বিশেষ করে শুক্রবার  গরীবের হজের দিন বলে মুসল্লিদের উপস্থিতি থাকে চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে কচুয়া পৌর এলাকার যুব সমাজের কাছে মডেল মসজিদটি প্রিয় হয়ে উঠছে। আধুনিক এ মসজিদটিতে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা। মসজিদ চত্বরে রয়েছে বিশাল জায়গা। যেখানে বসে মানুষ বিশ্রাম নেওয়ার পাশাপাশি ধর্মীয় চিন্তা-চেতনার অনুভূতি প্রকাশ করে একে অপরের সাথে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সূত্র মতে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে ওই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে 'প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন (প্রথম সংশোধিত)' শীর্ষক প্রকল্পটি ৮ হাজার ৭২২ কেটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের ২৬ জুন সম্পূর্ণ জিওবির অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্যে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। জেলা পর্যায়ে চারতলা ও উপজেলার জন্যে তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধাসহ এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে নারী ও পুরুষের পৃথক ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি গবেষণা ও দ্বীনি দাওয়াত কার্যক্রম, পবিত্র কোরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজ্বযাত্রীদের নিবন্ধন, প্রশিক্ষণ ও ইমামদের প্রশিক্ষণ ইত্যাদি ব্যবস্থা রয়েছে। ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্যে অফিসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মসজিদে নামাজ পড়তে আসা তরুণ মুসল্লি উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মোঃ গোলাম গাউস সোহাগ জানান, প্রায় ৫ কিলোমিটার দূর থেকে মডেল মসজিদে নামাজ পড়তে এসেছি। মসজিদটিতে নামাজ পড়ে মন জুড়িয়ে যায়। সময় পেলে আমি মসজিদটিতে নামাজ পড়তে চলে আসি। এখানকার পরিবেশ আমার মন কেড়েছে। বিশেষ করে মসজিদের সৌন্দর্য, অজুখানা, সুউচ্চ মিনার, মসজিদের আঙ্গিনা ও লাইব্রেরী।
পৌরসভার অধিবাসী মধু মিয়া জানান, পৌর এলাকায় মডেল মসজিদ স্থাপন হওয়ায় নিয়মিত মসজিদটিতে নামাজ আদায় করে আসছি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদটিতে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে নামাজ পড়ে হৃদয় শীতল করি। মসজিদটি অত্যন্ত নিরিবিলি পরিবেশে হওয়ায় নামাজ শেষে অলস সময় অতিবাহিত না করে মসজিদ আঙ্গিনায় হেলান দিয়ে বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়ি। মডেল মসজিদটি এই এলাকার মানুষের ধর্মীয় চিন্তাবোধ পাল্টে দিয়েছে। আজান হলেই এখন এলাকার যুব সমাজ অশ্লীল কথাবার্তা আর বাজে আড্ডায় নিজেকে নিয়োজিত না রেখে নিয়মিত জামাতের সাথে নামাজ আদায় করে আসছে।
মসজিদটির জমিদাতা বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, জীবনে অনেক টাকা-পয়সা উপার্জন করেছি। কোনো কিছুইতো আর পরপারে নিয়ে যেতে পারবো না। আখিরাত ও এলাকার ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কথা চিন্তা করে মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জন্যে জমি দান করে দিয়েছি। মহান আল্লাহ তা’আলা আমার এই দানকে কবুল করুক। যখন দেখি লোকজন কাতারে কাতারে সারিবদ্ধ হয়ে নামাজ পড়ে, আমার মন জুড়িয়ে যায়। ভিতর থেকে একটা আত্মতৃপ্তি পাই। দিনে দিনে মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংষ্কৃতিক কেন্দ্রটি যেন মুসলমান সমাজের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।