• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন ও নবীনবরণ

এই প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু আমার জন্যে ব্যক্তিগতভাবে স্বপ্ন পূরণ : শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি

বাংলাদেশ পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে : পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম

প্রকাশ:  ২২ মে ২০২৩, ১০:১৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

উৎসবমুখর পরিবেশে ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম (২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষ) উদ্বোধন ও নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০ মে শনিবার সকালে চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন এবং নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম। বর্ণিল সাজে সুসজ্জিত শিল্পকলা একাডেমী অডিটোরিয়ামটিতে দেশের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী আর রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায় অনুষ্ঠানটিকে।
চাঁবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ নাছিম আখতারের সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. হাবিবুর রহমান ও  একুশে পদকপ্রাপ্ত সিভাসুর সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ।
আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ, বিপিএম (বার), চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ড. সোহেলা আক্তার ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক বায়েজিদ আহমেদ রনি ও শিক্ষার্থী সুদীপ্ত ঘোষ তুর্য।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মেজর মোঃ আব্দুল হাই (অবঃ)।
সুদীপ্ত চাঁদপুর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এমআর ইসলাম বাবু ও চাঁবিপ্রবি’র শিক্ষার্থী মাহজেবিন জান্নাত যৌথভাবে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন। সকাল ১০টার পর অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয় নবীণ শিক্ষার্থীদের। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গীতা পাঠ ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেন, যে কোনো বিশ^বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপর পড়া যায়। তারপরও কেনো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলেন? যুগের চাহিদা হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে স্বতন্ত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করছেন। যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি শিক্ষায় উৎসাহিত হয়। আইটির উপর দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে। তিনি বলেন, সময় বদলেছে, তাই এখন আমরা প্রতিযোগিতাময় শিক্ষা ব্যবস্থা বাদ দিয়ে সহযোগিতাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছি। যাতে করে শিক্ষার্থীরা গতানুগতিক পাঠদান থেকে বেরিয়ে এসে কর্মজগতের সাথে মিল রেখে শিক্ষার্জন করতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, চাঁদপুরে প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু এটা আমার জন্যে ব্যক্তিগতভাবে স্বপ্নপূরণ। এই স্বপ্ন পূরণের মুহূর্তে আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞতা জানাই তাঁর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, উচ্চ শিক্ষাসহ শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে গুণগত মান অর্জন করতে চাই। শিক্ষায় রূপান্তর ঘটানোর জন্যে সারাবিশ্বে যে চেষ্টা চলছে আমরা তার অগ্রভাগে আছি। ইতিমধ্যে আমরা আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম চালু করেছি। যার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা চিন্তা করতে ও সমস্যা সমাধান করতে শিখবে, তারা মননশীল হবে এবং তারা মানবিক সৃজনশীল মানুষ হবে। কেননা আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক মেধাবী।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার জন্যে একটি পরিবেশের প্রয়োজন রয়েছে। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়টি অস্থায়ী ক্যাম্পাসে হলেও শীঘ্রই যাতে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারে সেদিকে কাজ করছি। আশা করছি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, এখন অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার কার্যক্রম শুরু করা হলেও আমরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের অনুমতি পেয়ে যাবো। তিনি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্যে সবাইকে স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম বলেন, সরকারি চাকরি টার্গেট করে যাতে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা না করে সে লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার। কারণ সরকার চায় শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরির চাইতেও বেশি উপার্জনে পারদর্শী হোক। আর তাই শেখ হাসিনার সরকার প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা চালু করছে। আইসিটি হাইটেক পার্ক, স্কুলে স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব করে দিয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারে প্রযুক্তিতে দক্ষ হতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইসিটিতে আমাদের অবধারিত সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশ পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সভাপ্রধানের বক্তব্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ নাসিম আখতার বলেন, আমি ভাড়া বাসায় ক্যাম্পাসটি চালুর মধ্য দিয়ে বীজ বপন করলাম। এর সুফল এখানে অধ্যয়নরতরাই একসময় পাবে। সারাদেশের অন্য সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইতে এটির শিক্ষা কার্যক্রম হবে মডেল। আমি আশাবাদী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক সময় দেশের জন্যে সম্পদে পরিণত হবে।
অনুষ্ঠানে ফুলেল শুভেচ্ছায় নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ,  সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী-পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য জানান, প্রথম ব্যাচে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৩০, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগে ৩০ এবং ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগে ৩০ জনসহ মোট ৯০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নদীবিধৌত চাঁদপুরবাসীর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এক বিশেষ উপহার চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন ও বাস্তবায়নে চাঁদপুরের কৃতী সন্তান শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির অবদান অনস্বীকার্য। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এদিন (২০ মে, ২০২৩ খ্রিঃ) এ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলো।

 

সর্বাধিক পঠিত