চাঁদপুরের ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ পাঁচ মাস
সাড়ে প্রায় পাঁচ মাস ধরে নানা সমস্যায় চাঁদপুরের ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দুদিনের ব্যবধানে এ কেন্দ্রের দুইটি ইউনিটে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
চাঁদপুর পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির তথ্য মতে, এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে চায়না চেংদা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। পরে ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে উৎপাদনে যায় কেন্দ্রটি।
প্রথমদিকে গ্যাস নির্ভর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা থাকলেও নিয়মিতভাবে ১৬০ থেকে ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। কিন্তু গ্যাস সংকট ও বড়বড় যন্ত্রপাতি অকেজো হওয়ায় ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রটির ৫০ মেগাওয়াটোর ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। তার তিনদিন পর ১০০ মেগাওয়াটের ইউনিটটেও উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ নূরুল আবছার বলেন, “রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়। এখানে দুটি ইউনিট একটি ৫০ মেগাওয়াটের এবং আরেকটি ১০০ মেগাওয়াটের। ১০০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি ৫০ দিন সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের পরে ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি চালু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু একটি গ্যাস বুস্টার চালু না হওয়ায় আর চালু করা সম্ভব হয়নি।”
গ্যাস বুস্টারটি ঠিক করার বিষয়ে তিনি বলেন, “দেশীয় লোকবল ও প্রযুক্তির মাধ্যমে চেষ্টা করা হলেও বুস্টারটি ঠিক হয়নি। আসলে এটি ঠিক করতে হলে বিদেশি বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন।
“বিদেশি অভিজ্ঞদের দ্বারা এ রকম সূক্ষ্ম কাজ ঠিক করা সম্ভব। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। গ্যাস বুস্টারটি ঠিক করার জন্য তাদের সঙ্গে চুক্তি করেছি।”
আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ বিদেশ থেকে মালামাল দেশে আসলে আবার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে, বলেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের এই কর্মকর্তা।
এদিকে কয়েকদিনের লোডশেডিংয়ের কারণে চাঁদপুরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিদ্যুতের কারণে ভোগান্তির শিকার সাবই। বারবার লোডশেডিং হওয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছে মানুষ।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের তথ্য মতে, চাঁদপুর জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৮৫ মেগাওয়াট। কিন্তু চাহিদানুযায়ী সরবরাহ হচ্ছে ১৪৫ মেগাওয়াট।
চাঁদপুর শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ। আর গ্রামের বিদ্যুৎ সরবরাহ করে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২।
জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে এই জেলার চাহিদার তুলনায় মাত্র ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ পাচ্ছে গ্রাহকরা। সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম