• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর শহরকে নান্দনিক করতে চাঁদপুর পৌরসভা মেয়রের প্রচেষ্টা অব্যাহত

প্রকাশ:  ১০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

শত বছরের পুরানো চাঁদপুর শহর। কালের বিবর্তনে মহকুমা শহর থেকে জেলা শহর হয়েছে। ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর নামে খ্যাতি পেয়েছে। কিন্তু শহরটির রাস্তাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সেই আগের অবস্থায়। রাস্তার যেমন কোনো পরিধি বাড়েনি, তেমনি আধুনিকতারও কোনো ছোঁয়া লাগেনি। এই শহরকে সাজানো গোছানো এবং নান্দনিক করে তোলার দায়িত্ব যেই সংস্থার, সেই পৌরসভা শত বছরেরও অধিক পুরানো হলেও শহরকে সুন্দর করার প্রয়াস বিগতদিনে তেমন একটা হয় নি। বর্তমান মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল সেই দিকে মনোনিবেশ দিয়েছেন।
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলের মেয়াদকাল আড়াই বছর চলমান। এই সময়ে তিনি চাঁদপুর শহরকে সাজাতে এবং নান্দনিক করে গড়ে তুলতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করেছেনও বটে। তবে বড় ধরনের প্রকল্পের বাজেট বরাদ্দ না হওয়ায় বেশ কিছু পরিকল্পনা এখনো আলোর মুখ না দেখলেও চোখে পড়ার মতো কয়েকটি কাজ এই শহরে হয়েছে। যা শহরবাসী ইতোমধ্যে মেয়রের প্রশংসা করেছে। তার মধ্যে তিনটি কাজ উল্লেখ করার মতো। একটি হলো চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মোড় চিত্রলেখা মোড়কে প্রশস্তকরণ। এই মোড়টি আগের অবস্থান থেকে প্রায় ছয় ফুট প্রশস্ত করা হয়েছে। মোড় প্রশস্ত করেই মেয়র থেমে যান নি। মোড় প্রশস্ত করে ফুটপাত সরকারি কলেজের পূর্ব গেটের সাথে ঠেকিয়ে দিয়েছেন। তখন দেখা গেলো মোড় প্রশস্ত হয়েছে ঠিক, কিন্তু কলেজের সামনের সড়কটি সরু। জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চাঁদপুর সরকারি কলেজ। কলেজটির সামনের বাউন্ডারি দেয়াল বলতে গেলে রাস্তার উপরে। এমন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে হাঁটার জন্য কোনো ফুটপাত নেই। কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থাও ছিল না এ যাবত পর্যন্ত। এদিকেও মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল নজর দিলেন। তিনি চিত্রলেখা মোড় প্রশস্তকরণে যে সুন্দর ফুটপাত করা হয়েছে, তার সাথে মিলিয়ে কলেজের সামনের রাস্তা প্রশস্ত করার বিষয় ভাবতে লাগলেন। আর এটা করতে হলে কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতা করে কলেজের বাউন্ডারি দেয়াল সরাতে হবে, কলেজের কিছু জায়গা ছাড়তে হবে। এই চিন্তা থেকে মেয়র শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির পরামর্শে কলেজ অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টজনের সাথে একাধিকবার বসলেন। জনস্বার্থে এবং কলেজের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সুবিধা বিবেচনায় নিয়ে পৌরসভা এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ রাস্তা প্রশস্তকরণ এবং ফুটপাত নির্মাণে একমতে পৌঁছলেন। সে আলোকে কাজ শুরু হয়ে এখন শেষ হওয়ার পথে। কলেজের বাউন্ডারি দেয়াল সরিয়ে নেয়া হয়। কলেজের প্রায় ৮/১০ ফুট জায়গা ছেড়ে দেয়া হয় রাস্তা প্রশস্ত করা এবং ফুটপাতের জন্যে। এখন সেখানে প্রায় ৬ ফুট রাস্তা প্রশস্ত হয়েছে, আধুনিক মানের সুন্দর ড্রেন হয়েছে, ফুটপাত হয়েছে। এতো বছর যাবত এই তিনটার কোনোটাই ছিল না এখানে। মেয়রের এমন যুগান্তকারী পদক্ষেপে শহরবাসী মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং প্রশংসা করেছেন।
সম্প্রতি মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল আরেকটি প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। সেটা হলো- শহরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মোড় মিশন রোড ও বঙ্গবন্ধু সড়ক মোড় প্রশস্তকরণ। এই মোড়টি আগে খুবই সরু ছিল। অথচ ভারি যানবাহন শহরে যাতায়াত করতে এই মোড়টি ব্যবহার হয়ে থাকে। মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল বঙ্গবন্ধু সড়কমুখে থাকা কয়েকটি দোকান উচ্ছেদ করলেন। মোড়সহ বঙ্গবন্ধু সড়কে প্রবেশপথ ১০ থেকে ১১ ফুট প্রশস্ত করা হলো। এখন মিশন রোড মসজিদ এবং বঙ্গবন্ধু সড়ক মোড় একটি বিশাল চত্বর।
এই শহরের হার্ট পয়েন্ট খ্যাত শপথ চত্বরটি ভেঙ্গে সেখানে নতুন করে চত্বর করা হয়েছে। এতে চত্বরের জায়গা অনেকটুকু রাস্তায় চলে এসেছে। এটা ব্যস্ততম এই মোড়টির জন্য ভালো একটা উদ্যোগ বলে মনে করেন শহরবাসী।
এছাড়া শহরের লেক সৌন্দর্যকরণেও রেল কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে কাজ শুরু করা হয়েছে।
এ সব বিষয়ে পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি প্রথমে শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো প্রশস্ত করার কাজে হাত দিয়েছি। এখন সামনে কাজ হলো নতুনবাজার মোড় প্রশস্ত করা। এটির প্রাথমিক কাজ এগিয়ে আছে। আমার আরো কিছু মেগা পরিকল্পনা আছে। তার মধ্যে রয়েছে শহরের উপর দিয়ে বেশ কিছু বাইপাস সড়ক নির্মাণ। শহরের লেক দুটিকে আধুনিক মানের করে নান্দনিক লেক গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি আমার মেয়াদকালের বাকি সময়ে এগুলো অনেকটা আলোর মুখ দেখবে। এসব বিষয়ে আমি পৌরবাসীর সহযোগিতা চাচ্ছি।

 

সর্বাধিক পঠিত