• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

মতলব উত্তরের সেনা সদস্য তুষার হত্যার ঘটনায় ট্রাক চালক গ্রেপ্তার

প্রকাশ:  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ট্রাক চাপায় কুমিল্লা সেনানিবাসে কর্মরত সেনা সদস্য নিহতের ঘটনায় লাইসেন্সবিহীন চালক আবুল কালাম (৬২)কে শনাক্ত ও গ্রেফতার এবং ট্রাক জব্দ করা হয়েছে।
২১ ফেব্রুয়ারি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বালুয়াকান্দি এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যায় মোটরসাইকেল চালক সেনা সদস্য তুষার। আহত হন মোটরসাইকেল আরোহী তুষারের দুলাভাই রিয়াজ (২৭)। দুর্ঘটনার পর ঘাতক ট্রাকচালক ট্রাক নিয়ে দ্রুত ওই স্থান থেকে পালিয়ে যায়।
দুর্ঘটনায় নিহত মোটরসাইকেল চালক তুষারের আইডি কার্ড পর্যালোচনায় জানা যায়, তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সদস্য। তার পূর্ণ নাম মেহেদী হাসান তুষার (২৫)। তিনি মতলব উত্তর থানার নয়াকান্দি গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে। তার পিতা জসিম উদ্দিন একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। তুষার তার দুলাভাইকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে গাজীপুর থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলো। পথিমধ্যে সন্ধ্যার দিকে তারা মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি এলাকায় পৌঁছলে পেছন দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনায় হেলমেট পরিহিত মোটরসাইকেল চালক তুষার ঘটনাস্থলেই মারা যায় ও তার সাথে থাকা আরোহী রিয়াজ গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। আহত রিয়াজকে উদ্ধারপূর্বক স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং একদিন চিকিৎসাধীন থেকে পরবর্তীতে নিজ বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করেন। দুর্ঘটনায় নিহত মোটরসাইকেল চালক তুষারের বাবা বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানায় সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৯৮/১০৫ ধারায় অজ্ঞাতনামা চালক ও অজ্ঞাতনামা গাড়ির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন, যার নং-১২, তারিখ : ২২/০২/২০২৩ খ্রিঃ।
ঘটনাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় একাধিক টিম ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত চালককে আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়। ছায়া তদন্ত, গোয়েন্দা টিম হতে প্রাপ্ত তথ্য ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘটনাস্থলের আগে ও পরে একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘাতক ট্রাক চালককে শনাক্ত করা হয়।
পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানাধীন গৌরিপুর এলাকা হতে ঘাতক ট্রাক চালক আবুল কালাম (৬২) (পিতা-ছিদ্দিকুর রহমান, সাং-স্বল্প পেন্নাই, থানা-দাউদকান্দি, জেলা-কুমিল্লা)কে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় দুর্ঘটনায় জড়িত ট্রাকটিও জব্দ করা হয়।
র‌্যাব সূত্র জানায়, ঘাতক ট্রাক চালককে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তার ড্রাইভিং লাইসেন্সটি হারিয়ে ফেলেছে বলে জানায়। ট্রাক চালক বলেন, ১৯৮২ সালে তিনি নিজের নামে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স (হালকা) তৈরি করেন। ১৯৯৪ সালে তার লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলেও অদ্যাবধি তিনি লাইসেন্সের মেয়াদ নবায়ণ করেন নি। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তিনি নিজে একটি ট্রাক ক্রয় করেন এবং ২০২০ সাল থেকে পেশাদারভাবে হেলপার ব্যতীত নিজেই ট্রাকটি চালনা করছিলেন। লাইসেন্স ব্যতীত গাড়ি চালনা, হেল্পার ব্যতীত মহাসড়কে দীর্ঘপথ অতিক্রম, অধিক বয়সের কারণে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ লোপ পাওয়া, অল্প সময়ের মধ্যে মালামাল আনলোড করে অন্য একটি ট্রিপ ধরার নিমিত্তে নির্ধারিত গতির চেয়ে অধিক গতিতে গাড়ি চালনায় উক্ত দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়ার মুখ্য কারণ হিসেবে আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রতীয়মান হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।

 

সর্বাধিক পঠিত