• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

আজ অমর একুশে

প্রকাশ:  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো, একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ দেহ-মন শিহরিত ও দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত হওয়া কালজয়ী এ গানটি যে দিবসকে ঘিরে সেই অমর একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ। মায়ের ভাষা ‘বাংলা’কে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার দাবিতে ১৯৫২ সালের এদিনে ঢাকার রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করেছিলো সালাম, বরকত, রফিক, শফিউর ও জব্বারসহ বাংলার আরো বহু দামাল ছেলে। এ আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে যে আলোকিত সড়ক তাঁরা নির্মাণ করে গেছেন, সে পথ ধরেই একাত্তরে এসেছে বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান ‘স্বাধীনতা’। আর বাংলা রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভাষার জন্যে কোনো জাতি প্রাণ দিয়েছে এ দৃষ্টান্ত শুধু বাঙালিরই। প্রতি বছর এ দিবসটি প্রাণের উচ্ছ্বাসে উদযাপন করে থাকে বাঙালি। শুধু বাঙালিই নয়, বিশ্বের দুই শতাধিক দেশ বাঙালির এ দিবসকে পালন করছে ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির ফলে। প্রতি বছর এ দিবসটি বেশ সাড়ম্বরে উদযাপিত হলেও এই ক’বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে উদযাপিত হয়ে আসছে। তবে গুরুত্ব ও তাৎপর্যের কমতি নেই। দিবসটি ঘিরে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও দিবসটি যথাযথভাবে উদযাপন করবে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সপ্তাহব্যাপী বই মেলা উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে চাঁদপুর জেলা সদরে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের কর্মসূচি শুরু হয়। গতকাল ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা থেকে চাঁদপুর জেলা শিশু একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয় চিত্রাঙ্কন, সঙ্গীত, কবিতা আবৃত্তি ও সুন্দর হাতের লেখা এবং বাংলা বানান প্রতিযোগিতা। গতকাল রাত ১০টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত শহিদ মিনারে জাগরণী অনুষ্ঠান ও কবিতা আবৃত্তির আসরের আয়োজন করা হয়। এরপর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু হয় চাঁদপুর শহরের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কস্থ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার বেদীতে ভাষা শহিদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ। এছাড়া একই বেদিতে আজ ভোর ৬টা থেকে শহরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে প্রভাত ফেরি ও পুষ্পস্তবক অর্পণের কার্যক্রম চলবে।

দিবসটি উপলক্ষে গতকাল থেকেই চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ও সংশ্লিষ্ট উপ-কমিটির ব্যবস্থাপনায় চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ‘অঙ্গীকার’, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বর, ইলিশ চত্বর, চিত্রলেখার মোড়, সড়ক দ্বীপ, বাসস্ট্যান্ডসহ অন্যান্য স্থাপনা বাংলা বর্ণমালা ও ফেস্টুনসহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবন এবং বেসরকারি ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হবে। জেলার সকল মসজিদে ভাষা শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় সুবিধাজনক সময়ে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা করা হবে। ভাষা শহিদদের স্মরণে সকল স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা, বইপাঠ, স্বরচিত ছড়া ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতাসহ অন্যান্য প্রাসঙ্গিক কর্মসূচি উদযাপন করা হবে। বিকেল ৪টায় চাঁদপুর কেন্দ্রিয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে হবে সপ্তাহব্যাপী বই মেলার সমাপনী ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যা ৬টায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সর্বাধিক পঠিত