• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : কেমন আছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ-৫ দেশকে মায়ের মতো ভালোবাসতে হবে : মফিজুল ইসলাম

প্রকাশ:  ০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১৩:১১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম। বাড়ি হাজীগঞ্জের কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের ফিরোজপুর গ্রামে। বর্তমানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন মকিমাবাদ গ্রামে। ৫ সন্তানের জনক এই বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। ছাত্রজীবন শেষ করে শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন কিছুদিন। তারপর ইউপি সচিব হিসেবে কাজ করার পর ২০১৬ সালে অবসর নেন।  দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের আয়োজন ‘বিজয়ের মাস  ডিসেম্বর : কেমন আছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ’ আজকের পর্বে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশকে মায়ের মতো ভালোবাসতে হবে’। তার  আরো না বলা কথাগুলো চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠকদের জন্যে নিচে তুলে ধরা হলো :
চাঁদপুর কণ্ঠ :  বছর ঘুরে আবার আসলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আপনার অনুভূতি কেমন? 
মফিজুল ইসলাম : এই বয়সে এসে যে ভালো আছি সেটা এক ভিন্ন মাত্রার অনুভূতি। বিজয়ের মাসের অনুভূতি বলে বুঝানো যাবে না। ৭১ সালের এই মাসে আমরা যে আনন্দ করেছি সেটি সবসময় ভাবলে মনকে নাড়া দেয়। বিজয়ের আনন্দ সে-ই বুঝে যে খেলে। আমরা যুদ্ধ করেছি আর জিতেছি-এই অনুভূতি অন্য কেউ বুঝবে না।
চাঁদপুর কণ্ঠ :  সার্বিকভাবে আপনি কেমন আছেন?
মফিজুল ইসলাম : জাতির পিতার ডাকে স্বাধীনতা যুদ্ধে গিয়েছি, আর তাঁরই কন্যার হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তা হিসেব করলে আমরা সার্বিকভাবে ভালো আছি। 
চাঁদপুর কণ্ঠ : ৫২ বছর পূর্বের মুক্তিযুদ্ধের কোন্ স্মৃতি আপনার মনে এখনও জ্বলজ্বল করছে?
মফিজুল ইসলাম : মনে আছে, ১৯৭১ সালের জুনের শেষের দিকে ভারতে ট্রেনিং করার জন্যে রওনা দেই। কোনো এক রাতে সালদা নদী সাঁতরে ভারতে যাওয়ার জন্যে ২৫ জনের একটি দল রওনা দেই।  সালদা নদীর পাড়ে পাঞ্জাবীদের সশস্ত্র পাহারা চলছিল। তার মধ্য দিয়ে ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকারে আমরা নদীর অপর পাড়ে যাওয়ার জন্য সাঁতার শুরু করি। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, ২৫ জনের দলের ২৩ জন নদী সাঁতরে অপর পাড়ে যেতে সক্ষম হলেও দুজনের হদিস আমরা আর পাইনি। সেই দুই জন নদীতে নেমে অন্ধকার হওয়ার কারণে দিক হারিয়ে নদীর অপর পাড়ে না গিয়ে স্রোতের দিকে সাঁতরে চলে হয়তো ডুবে গেছে। সেই দুজনের স্মৃতি এখনো মনের মধ্যে জ্বলজ্বল করে জ¦লে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : অনেক রক্তে অর্জিত প্রিয় স্বাধীন দেশের বর্তমান অবস্থায় আপনি কতোটুকু সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট? 
মফিজুল ইসলাম : আমাদের প্রতিবেশী কিছু দেশের তুলনায় সবদিকে দিয়ে আমরা ভালো আছি। এতে আমরা সন্তুষ্ট। আর নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্যের কারণে অসন্তুষ্টিতে ভুগি। আবার এও ভাবি, এটা আমার দেশের সমস্যা না, এটা বৈশ্বিক সমস্যা।
চাঁদপুর কণ্ঠ : সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতেই মানুষের জন্ম/মৃত্যু। মাফ করবেন, তবুও জানার ইচ্ছা, আপনি আর কতোদিন বাঁচতে চান?
মফিজুল ইসলাম : সৃষ্টি কর্তার ইচ্ছায় জন্ম আর মৃত্যু, তার উপর আমাদের কারো হাত নেই, তার পরেও বেঁচে থাকার স্বাদ সবারই থাকে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আপনি কী কথা রেখে যেতে চান?
মফিজুল ইসলাম : জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে যেভাবে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাচ্ছেন সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আওয়ামীলীগ তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলকে সহযোগিতা করতে হবে, আর দেশকে মায়ের মতো ভালোবাসতে হবে। 

সর্বাধিক পঠিত