কেন্দ্রীয় সভাপতি টুকুসহ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে
চাঁদপুর জেলা যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাজশাহী সমাবেশ থেকে ফেরার পথে ঢাকায় যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সহ-সভাপতি নূরুল ইসলাম নয়ন গ্রেফতারের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা যুবদল। ৪ ডিসেম্বর রোববার বিকেলে জেলা যুবদল শহরের নতুনবাজার এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। সেখানেই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ সলিম উল্লাহ সেলিম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছে। যুবদল কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে আটক করা হয়েছে। চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের ঢাকার বাসায় পুলিশ হানা দিয়েছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তিনি আরো বলেন, আগামী দিনে কঠিন সময় আসছে আমার বিশ্বাস। এই যুবদল যদি শক্তি প্রদর্শন করে তাহলে আগামী ১০ তারিখের সমাবেশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নয়, হবে পল্টনেই। আপনাদের আরো কঠিনভাবে সংগঠিত হতে হবে।
তিনি বলেন, এরশাদের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ আন্দোলন করেছে। সে সময় পুলিশ গুলি করে অনেককে হত্যা করেছে। তাদের মধ্যে চাঁদপুরের রাজুও নিহত হয়েছেন। ৩ ডিসেম্বর তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং শপথবাক্য পাঠ করানোর সময় কলেজের অধ্যক্ষ অসিত বরণ দাস বিএনপিকে প্রতিহত করার কথা বলেছেন। আমি বলতে চাই, বিএনপিকে প্রতিহত করার বক্তব্যের জন্যে সরকার যদি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয় তাহলে এই ছাত্র সমাজ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
চাঁদপুর জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মানিকুর রহমান মানিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ নূরুল আমিন খান আকাশের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার।
এ সময় জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন সাগর, সহ-সভাপতি সরোয়ার গাজী, মোস্তফা বন্দুকসি, শাহজাহান কবির খোকা, শামীম জমাদার, যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম নজু, সালাউদ্দিন বেপারী, পারভেজ আলম রবিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রাজ্জাক হাওলাদারসহ জেলা, উপজেলা ও পৌর যুবদলের বিভিন্ন পর্যায়ে অসংখ্য নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
চাঁসকের সাবেক ভিপি, জিএস ও জেলা ছাত্রদল নেতৃবৃন্দের বিবৃতি
প্রেস বিজ্ঞপ্তি ॥ চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি, জিএস ও জেলা ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে বলেন, অধ্যক্ষ অসিত বরণ দাস সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সমস্ত বিধি-বিধান ভঙ্গ করে একটি সংগঠনের পক্ষ নিয়ে নির্লজ্জ দলবাজি করে চলছেন। ১৯৯০ সনে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারে বিরুদ্ধে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপোসহীন নেতৃত্বে বিএনপি দেশব্যাপী কঠিন আন্দোলন সংগঠিত করে এরশাদের পতন ঘটান। কিন্তু দীর্ঘ নয় বছরে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বারবার ভেলকিবাজি করে জাতির সাথে বেঈমানি করে অবৈধ এরশাদের সাথে নির্লজ্জভাবে আঁতাত করে এরশাদকে বৈধতা দেয়ায় চেষ্টা করে। দীর্ঘ তীব্র আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে গত ৩ ডিসেম্বর ৯০-এর চাঁদপুর ছাত্র সমাজের চূড়ান্ত আন্দোলনের একটি বিশাল মিছিলে এরশাদ সরকারের পুলিশ অতর্কিত গুলি করে তৎকালীন ছাত্রনেতা জিয়াউর রহমান রাজুকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং অসংখ্য ছাত্র জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হয়। আমরা শহীদ রাজুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি। সেই শহীদ জিয়াউর রহমান রাজুর আত্মত্যাগকে পুঁজি করে তার শাহাদাত দিবসে গত ৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরে একটি সংগঠন কর্মসূচি পালনকালে রাজুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে কলেজের অধ্যক্ষ উপস্থিত লোকজনের সামনে একটি শপথ বাক্য পাঠ করাতে গিয়ে বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে প্রতিহত করার ঔদ্ধত্যপূর্ণ ঘোষণা দিয়ে নির্লজ্জ দলীয় কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করেছেন। যা আবার বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেছেন। আমরা চাঁদপুর কলেজের সাবেক ভিপি, জিএস ও সকল ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ ও চরম ঘৃণা প্রকাশ করছি, অবিলম্বে সরকারি দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ দাবি করছি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। নতুবা চাঁদপুরের ছাত্র-জনতা কঠিন আন্দোলনের মাধমে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করবে।
চাঁসক অধ্যক্ষের বক্তব্য
‘অধ্যক্ষ চাঁদপুর সরকারি কলেজ’ নামক ফেসবুক আইডিতে অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ লিখেছেন, ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানের বীর শহীদ জিয়াউর রহমান পাটোয়ারী রাজু’র ৩২তম শাহাদাতবার্ষিকী স্মরণে ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রিঃ শনিবার বেলা ১১টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজে শহীদ রাজুর সমাধিস্থলে আমি অধ্যক্ষ, চাঁদপুর সরকারি কলেজর শপথ বাক্য পাঠ নিয়ে একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা তৈরি হয়েছে। ‘রাজু স্মৃতি সংসদ’ নামের সংগঠন ‘শহীদ রাজু’ দিবসে সবসময় একটি শপথ বাক্য পাঠ করে থাকে। এবার আমি সেখানে উপস্থিত থাকায় সবাই আমাকে তাদের লিখিত শপথ বাক্যটি পাঠ করানোর অনুরোধ করে। এ পরিস্থিতিতে শপথ বাক্যের সববাক্য সাথে সাথে আমার পক্ষে পড়ে নেয়ার সুযোগ ছিলো না। ফলে এই অসত্য বাক্যটি আমার কথায় উপস্থাপিত হয়েছে, যা সত্যিই দুঃখজনক। আমি এজন্যে দুঃখ ও বিএনপি, সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্যটির ভুল স্বীকার করছি। আমি মনে করি, স্বৈরাচারবিরোধী সকল আন্দোলনে বিএনপি ও ছাত্রদলের ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তাই স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদ রাজুর আত্মত্যাগের লক্ষ্য এবং বিএনপি ও ছাত্রদলের লক্ষ্যের মধ্যে কোনো বিরোধ থাকতে পারে বলে আমি চাঁদপুর সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ মনে করি না।