চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন : অধীনস্থ কমিটি পুরো প্রস্তুত থাকার পরও সম্মেলন হচ্ছে না!
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন ডিসেম্বরে- এই মেসেজ কয়েক মাস আগেই দলীয় নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে। আর জাতীয় সম্মেলনের আগে তৃণমূলের তথা জেলা-উপজেলার সকল মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন হয়ে থাকে এটাই বিগত দিনের রীতি। চাঁদপুর জেলাও এর বাইরে নয়। এই জেলার মেয়াদোত্তীর্ণ সকল কমিটির সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে এটাই দলের নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সম্মেলন হওয়ার কোনো লক্ষণ না দেখায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা হতাশ।
ডিসেম্বরে জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে অক্টোবরে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয় দলটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভায়। জেলা সম্মেলনের আগে অধীনস্থ সকল মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন করতে হবে এটাই রীতি। কিন্তু অক্টোবর চলে গেলেও জেলা সম্মেলন তো হয়ই নাই, এমনকি অধীনস্থ উপজেলা ও পৌর কমিটির একটারও সম্মেলন হয় নি।
জেলা সম্মেলন হওয়াটা অনিশ্চিত দেখা দিলে এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী থানা সম্মেলন শেষ হলে জেলা সম্মেলন হবে। এ জন্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ও জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বারবার তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও বেশ কটি থানা কমিটি সম্মেলন করে নি।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্যের বিপরীতমুখী বক্তব্য পাওয়া গেছে অধীনস্থ কয়েকটি কমিটির দায়িত্বশীল নেতাদের থেকে। তারা বলছেন, আমাদের সকল প্রস্তুতি থাকার পরও কেনো সম্মেলন হচ্ছে না বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নয়।
চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের দুইবারের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন দেওয়ান মন্টু বলেছেন, পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার জন্যে সকল প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও কেনো সম্মেলন করা হচ্ছে না এই বিষয়টি একমাত্র জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ ভালো বলতে পারবেন। আমি চাই খুব শীঘ্রই চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে।
চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ানের এ বিষয়ে বক্তব্য হচ্ছে, এক বছর পূর্বেই সকল ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন আমরা শেষ করেছি। জেলা আওয়ামী লীগের কাছে সম্মেলনের তারিখ চেয়েছিও প্রায় এক বছর হয়। কিন্তু কেনো জেলা আওয়ামী লীগ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ কেনো দিচ্ছে না সেটা আমার জানা নেই।
জেলা সাধারণ সম্পাদক এবং অধীনস্থ কমিটির নেতাদের বক্তব্য সুস্পষ্ট বিপরীতমুখী। এর নেপথ্যে কারণ এমন কী রয়েছে তা অনেকেরই প্রশ্ন। এটা জেলা সম্মেলন নিয়ে কালক্ষেপণ করার কোনো কৌশল কি না সেটা তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রশ্ন।
এদিকে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের বক্তব্যে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে বলে নতুন করে আশা জেগেছে নেতা-কর্মীদের মাঝে। তিনি মিডিয়ায় বলেছেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে। তাঁর এই ঘোষণাকে ধরেই নেতা-কর্মীরা বলছেন, এবার হয়তো মেয়াদোত্তীর্ণ উপজেলা ও পৌর কমিটিগুলোর সম্মেলন হবে। তাতে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সেটাই চাচ্ছে।