শারদীয় উৎসব উদ্যাপনে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
জেলায় পূজা ম-পের সংখ্যা ২১৯
যা দেবী সর্বভূতেষু শান্তিরুপেন সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমেঃ নমঃ। বছর ঘুরে আবার এলো শারদীয় দুর্গোৎসব। দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় জেলার ২১৯টি পূজা ম-প দেবী আরাধনায় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে রযেছে ব্যস্ত। বৈশি^ক মহামারি করোনার কারণে গত দু’বছর অনাড়ম্বর পূজা-অর্চনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল দুর্গাপূজা। তবে এবার সেই সীমাবদ্ধতা কেটেছে। এ বছর ব্যাপক আয়োজনে শারদীয় দুর্গোৎসব উদ্যাপনে সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে পরিলক্ষিত হচ্ছে বিশাল আকারের সুসজ্জিত প্যান্ডেল। আর প্রতিমা নির্মাণে ব্যস্ত রয়েছে মৃৎ শিল্পীগণ। পূজার সার্বিক সহযোগিতায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর দুঃস্থ অসহায় ভক্তদের আহার্যের জন্যে পূজা ম-পে সরকারি অনুদান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সরকারিভাবে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখা চাঁদপুরের ২১৯টি পূজা ম-পের জন্যে ৫শ’ কেজি হিসেবে ১১০ মেঃ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে।
শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব উদ্যাপনে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন গ্রহণ করেছে সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। উৎসবকে ঘিরে জেলার ৮ উপজেলায় চলছে আনন্দ উৎসাহ।
জেলার ২১৯টি পূজা ম-পের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ৩৬টি, হাজীগঞ্জে ২৯টি, কচুয়ায় ৪১টি, হাইমচরে ৬টি, শাহরাস্তিতে ১৮টি, ফরিদগঞ্জে ২০টি, মতলব দক্ষিণে ৩৮টি এবং মতলব উত্তরে ৩৮টি পূজা ম-প।
বর্তমানে প্রতিটি পূজাম-পে চলছে দেবী প্রতিমার শরীরে বিভিন্ন রংয়ের প্রলেপ দেয়ার কাজ। ডেকোরেটরের সাজসজ্জার কাজও প্রায় অনেকটা রয়েছে শেষ পর্যায়ে।
উল্লেখ্য, সারাদেশে এ বছর ৩২হাজার ১শ’ ৬৮টি পূজাম-পে উদ্যাপন করা হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। সব ম-পেই নিরাপত্তা নিয়ে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ।
শনিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকেশ^রী জাতীয় মন্দিরের মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় পরিষদের সভাপতি জে. এল. ভৌমিক এ কথা জানান।
তিনি বলেন, গত বছরের সহিংসতার কথা মাথায় রেখে এ বছর সরকার চাচ্ছে কোনও অবস্থাতেই যেন কোনও অঘটন না ঘটে। তাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি সক্রিয়। আমাদের ৩২ হাজার ১শ’ ৬৮টি মন্দির সুরক্ষা দেয়া খুব কঠিন। তাই আমরা এ বছর প্রত্যেক মন্দিরে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করছি, যারা রাতেও পাহারা দেবে।’
চাঁদপুর জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ জানান, গত বছর শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালীন যে পরিস্থিতি ও সহিংস ঘটনা ঘটেছে তা ছিল সম্পূর্ণ অনাকাক্সিক্ষত। দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় চাঁদপুর জেলার কয়েকটি স্থানের পূজা ম-পেও কিছু বিছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। তবে সে সময় পূজা ম-পের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনসহ জেলার অসাম্প্রদায়িক নেতৃবৃন্দ যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। আমরা আশা ও বিশ্বাস রাখি, শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় উৎসব সম্পন্নে এ বছরও প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।