• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ফরিদগঞ্জের বিভিন্ন খালে শতাধিক ভেসাল জাল ॥ অস্তিত্ব সঙ্কটে দেশীয় মাছ

প্রকাশ:  ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

বাঙালির প্রিয় দেশীয় ছোট মাছ। এক সময়ে পুষ্টিগুণে ভরপুর এসব মাছ বাজারে অহরহ পাওয়া গেলেও গত এক দশক পূর্বে হঠাৎ করেই এসব মাছ হারিয়ে যায়। এসব মাছের পরিবর্তে বাজার দখল করেছে চাষকৃত রুই কাতলা, মৃগেল, তেলাপিয়া, পাঙ্গাসসহ বেশ কয়েক জাতের মাছ। বিলুপ্তপ্রায় মাছ আবার ফেরাতে উদ্যোগী হয় সরকার তথা মৎস্য বিভাগ। তাদের নানা উদ্যোগের কারণে ইতোমধ্যেই গুটি কয়েক জাতের দেশীয় প্রজাতির মাছের দেখা মিললেও অবৈধ ভেসাল জালে এসব মাছের সর্বনাশ ডেকে আনছে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলাটির ডাকাতিয়া বুক চিরে চলে গেছে। ফলে এ নদীকে ঘিরে পুরো উপজেলায় রয়েছে ছোটবড় অনেক খাল। এসব খালে এক সময় প্রচুর পরিমাণে দেশীয় প্রজাতির অনেক জাতের ছোট-বড় টেংরা মাছ, গজার, মাগুর, বোয়াল, ফাসা, নুনা মাছ, চেবলী, আইকর, তপসি, কাইকা, চান্দা মাছ, ঢেলা, তারা বাইম, বাইলা, শিং, ভেটকি, চিংড়ি, কৈ মাছ, খৈলশা, পুঁটি দেখা গেলেও সংরক্ষণ পরিচর্যা এবং প্রজাতি ধরে রাখার ব্যবস্থা না থাকায় সর্বোপরি অসাধু জেলেদের ভেসাল জালসহ নানা জাল ব্যবহারে এগুলো প্রায় বিলুপ্তির পথে চলে যায়। পরে সরকার মৎস্য বিভাগের মাধ্যমে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে। নদী, খাল, বিল এবং পুকুরে বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করা শুরু করে। এর ফলে কয়েক জাতের মাছ ফিরে এলেও সম্প্রতি সেই ভেসাল জালের কারণে আবারো হুমকির মুখে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নগুলোতে ঘুরে ও খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন খালে প্রায় শতাধিক ভেসাল জাল বসানো হয়েছে। চান্দ্রা ওয়াপদা খাল, গোবিন্দপুর, চরদুঃখিয়া এলাকার খালে এসব জালের ছড়াছড়ি দেখা গেছে। কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে অবাধে দেশীয় প্রজাতির মা মাছ ও রেণু পোনা নিধন করলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ। আবার এসব মাছ ধরে দেদারছে হাটবাজারে বিক্রি করলেও কারো কোন ভ্রুক্ষেপ করছে না।
আবুল কালাম, ইদ্রিস আলী, আমান, কাদির, গনেশসহ বেশ ক’জন বলেন, অবৈধ ভেসাল জাল বন্ধ করা না গেলে বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় সরকারের নানা উদ্যোগ নিলেও কয়েক বছর পর ছোট মাছ খুঁজে পাওয়া যাবে না। এর পরিবর্তে বিভিন্ন সার প্রয়োগে উৎপাদিত হাইব্রিড মাছ খেয়ে অসুস্থ হওয়া ছাড়া কিছুই করার থাকবে না।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা আকতার রুমা জানান, সরকার দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষা ও ফিরিয়ে আনতে নানা চেষ্টা চালাচ্ছে। বিলুপ্ত প্রায় এসব মাছ রক্ষায় সাধারণ মানুষের সচেতনতা প্রয়োজন। ভেসাল জালসহ নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার বন্ধে জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে আসলে তা বন্ধ করা সহজ হবে। আমি জনবল কম নিয়েও প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ ভেসাল জাল তৈরি বন্ধ করা গেলেই কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হবে।

সর্বাধিক পঠিত