সেবা পাচ্ছেন তৃণমূলের হাজারো মানুষ ॥ প্রয়োজন আরও ঔষুধ

 দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো স্বাস্থ্যসেবা গ্রাম পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। স্বাস্থ্য সেবাদানকারীরা তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা প্রদান করছেন। তারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ে দরিদ্র মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছেন। স্থানীয় জনগণের প্রতিনিধিরা এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পরিচালনায় অংশ নিচ্ছেন।
বর্তমানে দেশে ১৩ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিকের মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরামর্শসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হয়। স্থানীয় পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে শিশুস্বাস্থ্য উন্নয়নে ওয়ার্ল্ড ভিশন কাজ করছে।
পল্লী এলাকায় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে এমনই অবদান রাখছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের উপাদিক কমিউনিটি ক্লিনিক। ১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার সরেজমিনে উপাদিক কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য সেবাদানকারী আঃ কাদির সোহাগ এক এক করে সিরিয়ালে রোগী দেখছেন এবং ওষুধ দিচ্ছেন। জটিল ও কঠিন রোগীদের বিভিন্ন রকম পরামর্শ দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করেছেন।
এলাকার সমাজসেবক আলহাজ্ব এরশাদুল্লাহ মিজি ২০১৪ সালে এ কমিউনিটি ক্লিনিকের নামে সম্পত্তি দান করেন। সে বছরই কমিউনিটি ক্লিনিকটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ওই বছরই তার কার্যক্রম শুরু হয়।
আঃ কাদির সোহাগ বলেন, এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি তাকে দিয়েই চিকিৎসা সেবা শুরু হয়। তিনি বলেন, এই কমিউনিটি ক্লিনিকে জ্বর, সর্দি-কাশি, পাতলা পায়খানা, এবং গর্ভপাতজনিত মহিলাদের পিএনসি সেবা, নবজাত শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসাসহ আরো কিছু চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। জটিল রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করা হয়। এ কমিউনিটি ক্লিনিকে দৈনিক তিনি ৩০ থেকে ৫৫ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রদান করে থাকেন।
আব্দুল কাদির সোহাগ আরো বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবার মান আরো বৃদ্ধি করতে ওষুধের চাহিদা আরো বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি বলেন, প্যারাসিটামল, ক্লোরোফিন ট্যাবলেট এবং সিরাপের সাপ্লাই আরো বাড়াতে হবে। এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে গ্যাস্টিকের জন্যে ওমিপ্রাজল গ্রুপের ট্যাবলেট সাপ্লাই দিতে পারলে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা অনেকটা সফল হবে বলে তিনি জানান।
কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন (৮০), লতুফা বেগম (৬৫), আব্দুল লতিফ (৭৭), আয়েশা (৩০), মনির (৩৬) ও বাবুল (৪৪) জানান, এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি এখানে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে আমরা বিনামূল্যে বিভিন্ন রোগের ওষুধ নিয়ে উপকার পাচ্ছি। আমাদের পল্লী এলাকার অসহায় মানুষদের ব্যাপক উপকার করে যাচ্ছে এই কমিউনিটি ক্লিনিক।