রাজনৈতিক ভাবনা-১১
একটি দলের দর্শনের ওপরই নির্ভর করে সে দলের জনপ্রিয়তা :মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নান্টু নূরুল ইসলাম
জাহাঙ্গীর আলম নান্টু। উদীয়মান একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। রাজনৈতিক জীবনে অধিকাংশ সময় পার করেছেন অপজিশন পার্টিতে। তাই ক্ষমতার রং কেমন এখনো সেভাবে বুঝতে পারেন নি। বিএনপির আদর্শ, জিয়াউর রহমানের দর্শনকে বুকে ধারণ করে বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে। স্বপ্ন, একদিন ফিরে পাবেন কাক্সিক্ষত মঞ্চ, স্বপ্নের সেই জনপদ। যে স্বপ্ন নিজেকে নিয়ে গেছে ত্যাগের কঠিন পথে। যে স্বপ্ন তাকে ঘুমাতে দেয়নি বহু রজনী। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির সেই আন্দোলনে ফরিদগঞ্জে হাতে গোণা যে ক’জন নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম অন্যতম। সে সময় তিনি নিজে সামনে থেকে আন্দোলন করেছেন। সাধারণ কর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে অসংখ্য রাত জঙ্গলে কাটিয়েছেন। মশার কামড়সহ অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন। একদিন সুদিন আসবে এই মন্ত্রে বিভোর হয়ে শত জুলুম, জেল আর নির্যাতন সহ্য করেছেন।
জাহাঙ্গীর আলম যখন হাই স্কুলে পড়েন তখন আস্তে আস্তে ছাত্র রাজনীতি বুঝতে শিখেন। কলেজে এসে শুরু করেন আনুষ্ঠানিক রাজনীতি। ৩৬ বছর রাজনৈতিক জীবনে তিনি এ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন উপজেলা ছাত্রদলের ১নং সদস্য, উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হিসেবে। বর্তমানে তিনি উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব অত্যন্ত সফলতার সাথে পালন করে যাচ্ছেন।
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নান্টু পেশায় একজন ব্যবসায়ী। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ‘রাজনৈতিক ভাবনা’ শীর্ষক আলাপচারিতায় তার ভাবনা তুলে ধরা হলো :-
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার দৃষ্টিতে যে কোনো নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন কিসের নিরিখে হয়? এ জন্যে কী কী করতে হয়?
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নান্টু : পরীক্ষিত নেতারাই মূলত মনোনয়ন পেয়ে থাকেন। তবে এর ব্যতিক্রমও হয়ে থাকে। মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রথমত তৃণমূলের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। সাংগঠনিক দক্ষতার পাশাপাশি কর্মী বান্ধব নেতাই সবার পছন্দ।
চাঁদপুর কণ্ঠ : স্থানীয় পর্যায়ে নিজ দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল কী কী কারণে হয় বলে আপনার ধারণা?
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নান্টু : দলীয় কোন্দল নেই। তবে পদ-পদবীর জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে কিছু বিরোধ হয়ে থাকে। মূলত নিজস্ব বলয় সৃষ্টির অভিলাষে কেউ কেউ এই কাজটি করে থাকে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : এ কোন্দল নিরসনে জেলা পর্যায় বা কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতার সাংগঠনিক ব্যবস্থাগ্রহণের হুঙ্কার সাধারণত দ্রুত উচ্চারিত হয় না। এটার কারণ কী?
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নান্টু : জেলা বা কেন্দ্রীয় নেতারা যথাযথ ব্যবস্থা নিলেও আমরা যদি ভিতরে ভিতরে ক্ষোভ পুষে রাখি তাহলে তাদের হুঙ্কার কীভাবে কাজে দিবে?
চাঁদপুর কণ্ঠ : দলের তৃণমূলের বর্ধিত সভায় কিংবা সাধারণ বর্ধিত সভায় খোলামেলা অনেক কথা হয়। অনেক তিক্ত সত্য কথা উচ্চারিত হয়। এগুলো কি আদৌ আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়?
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নান্টু : অবশ্যই নেয়, কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে সবকিছু আমলে নেয়া সম্ভব হয় না।
চাঁদপুর কণ্ঠ : রাজনীতিতে আদর্শের চর্চা ও দলীয় গঠনতন্ত্র যথাযথভাবে মেনে চলার গুরুত্ব কতোটুকু?
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নান্টু : আদর্শ ছাড়া দল হয় না। একটি দলের জনপ্রিয়তা এবং সৌন্দর্য কতটুকু তা নির্ভর করে তার দর্শনের উপর। সেই চর্চা অবশ্যই থাকতে হবে। আর গঠনতন্ত্র করাই হয় দল বা সংস্থা পরিচালনার জন্য।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি মনে করেন আপনার দলে উক্ত চর্চা বা মেনে চলার কাজটা যথাযথভাবে হচ্ছে?
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নান্টু : পৃথিবীর কোনো কিছুই পরিপূর্ণ নয়। সব সময় সব কিছু পালন করা সম্ভব হয় না। শুধু আমার দলই নয়, কোনো দলের পক্ষেই সম্ভব নয়। অনেক সময় বহিঃরাজনৈতিক, অপজিশন রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন সঙ্কটময় সময়ে শতভাগ পালন করা সম্ভব হয়ে উঠে না, কিন্তু চর্চা অব্যাহত থাকে।