• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

রাজনৈতিক ভাবনা-৯

তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতের গুরুত্ব না দেয়ায় দলের মধ্যে কোন্দলের সৃষ্টি হয়:শাহজাহান স¤্রাট

প্রকাশ:  ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

শাহরাস্তি উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের আন্দোলন-সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ মোঃ শাহজাহান সম্রাট। দলীয় যে কোনো কর্মসূচিতে তার উপস্থিতি লক্ষণীয়। ২০০২ সালে চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে যাত্রা শুরু হয়। ২০০৬ সালে ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি, ২০১২ সালে ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক, ২০১৫ সালে থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক, ২০২১ সালে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও দলের গ্রুপিংয়ের জন্য পদ থেকে বঞ্চিত হন শাহজাহান সম্রাট। শিক্ষা জীবনে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে। পদবঞ্চিত ছাত্রদলের শাহজাহান সকল অভিমান ভেঙ্গে বিএনপিকে ভালোবেসে দলের কর্মসূচিতে রাজপথে স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের রাজনৈতিক ভাবনায় বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। নি¤েœ তা পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো :
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার দৃষ্টিতে যে কোনো নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন কিসের নিরিখে হয়? এজন্যে কী কী করতে হয়?
শাহজাহান সম্রাট : আমার দৃষ্টিতে মনোনয়ন দেয়া উচিত জনজরিপ নিয়ে দলের প্রতি ত্যাগ ও শ্রমের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে উঠে আসা নেতাদের। তাহলেই তৃণমূল নেতা-কর্মীরা রাজনীতিতে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পাবে। কিন্তু অধিকাংশ দল তাদের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামতের তোয়াক্কা না করে, কেন্দ্র বসে থাকা নেতারা টাকা দেখে ব্যবসায়ীমনা নেতাদের মনোনয়ন দিয়ে থাকেন। বাস্তবিক অর্থে দেখা যায় মনোনীত বা মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মনপুত হয় না। এতে করে তৃণমূল ও ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। তাই মনোনয়ন দেয়ার আগে অবশ্যই দলের হাইকমান্ডের উচিত তৃণমূল থেকে উঠে আসা নেতাদের মনোনয়ন দেয়া, নয়তো তাদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে মনোনয়ন প্রার্থী মনোনীত করা।  
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : স্থানীয় পর্যায়ে নিজ দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল কী কী কারণে হয় বলে আপনার ধারণা? এ কোন্দল নিরসনে জেলা পর্যায় বা কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতার সাংগঠনিক ব্যবস্থাগ্রহণের হুঙ্কার সাধারণত দ্রুত উচ্চারিত হয় না। এটার হেতু কী?
শাহজাহান সম্রাট : স্থানীয় পর্যায়ে কোন্দল হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে, দলের পোস্ট-পদবী বন্টনের ক্ষেত্রে যোগ্য নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে অনেক সময় কেন্দ্রীয় নেতা ও স্থানীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা তৃণমূল নেতাদের পছন্দের গুরুত্ব না দিয়ে নিজেরের পছন্দকে প্রাধান্য দেন, দলের মধ্যে শ্রম-ঘামবিহীন হাইব্রিড ব্যক্তিকে নেতা বানিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উপর চাপিয়ে দেন। অনেক সময় দলের চেইন অব কমান্ড অমান্য করে নেতা তৈরি করে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা-কোন্দল সৃষ্টি করেন। নিয়ম অনুযায়ী একটি দলের ওয়ার্ড কমিটি অনুমোদন করবে ইউনিয়ন কমিটি, ইউনিয়ন কমিটি অনুমোদন করবে উপজেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি অনুমোদন করবে জেলা কমিটি, জেলা  কমিটি অনুমোদন করবে কেন্দ্রীয় কমিটি। কিন্তু যখন দেখা যায় উপজেলা কমিটি অনুমোদন কেন্দ্র থেকে হয়, তখন জেলা কমিটির নির্দেশনা ঠিকমতো উপজেলা কমিটি বাস্তবায়ন করে না। সাংগঠনিক হুঙ্কার দিয়েও কন্ট্রোল করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। আমি মনে করি, এই বিশৃঙ্খলা কেন্দ্রের কিছু অতি উৎসাহী নেতাদের কারণে সৃষ্টি হয়। তাই দলের মধ্যে কোন্দল নিরসন করতে হলে দলের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার গুরুত্ব অপরিসীম।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : দলের তৃণমূলের বর্ধিত সভায় কিংবা সাধারণ বর্ধিত সভায় খোলামেলা অনেক কথা হয়। অনেক তিক্ত সত্য কথা উচ্চারিত হয়। এগুলো কি আদৌ আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়? 
শাহজাহান সম্রাট : তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামতের মূল্যায়ন করা হলে কোনো সময় দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় না, দল শক্তিশালী এবং সুসংগঠিত ও গণতান্ত্রিকভাবে শক্তিশালী হয়। অনেক সময় দেখা যায় দলকে এগিয়ে নিতে অনেক ভুলত্রুটি ঘুচিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তৃণমূল কর্মীরা উপস্থাপন করে নেতাদের সামনে। অধিকাংশ সময় দেখা যায় মতামতগুলো মতামতই থাকে, বাস্তবিক অর্থে বাস্তবায়িত হয় না। 
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : রাজনীতিতে আদর্শের চর্চা ও দলীয় গঠনতন্ত্র যথাযথভাবে মেনে চলার গুরুত্ব কতোটুকু? আপনি কি মনে করেন আপনার দলে উক্ত চর্চা ও মেনে চলার কাজটা যথাযথভাবে হচ্ছে?
শাহজাহান সম্রাট : গঠনতন্ত্রই হচ্ছে একটি দলের মূল চালিকাশক্তি। এটার ওপর ভিত্তি করেই দলের সকল কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়। সৎ আদর্শের ওপর ভিত্তি করে একটি দল টিকে থাকে। দলের মধ্যে সুশৃঙ্খল নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে গঠনতন্ত্র সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে যে কোনো দলই জনগণের সম্পৃক্ততায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। কিন্তু অধিকাংশ সময় দেখা যায় যে, দলগুলো তাদের দলের মধ্যে গঠনতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও গণতন্ত্রের চর্চা করতে ব্যর্থ হয়। 

 

সর্বাধিক পঠিত