• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

মৈশাদীতে বীর নিবাস নির্মাণে ভারপ্রাপ্ত ঠিকাদারের গড়িমসি না অন্য কিছু?

প্রকাশ:  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৩১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে শেষ জীবনে একটি শান্তির আশ্রয়ের জন্য সরকার ‘বীর নিবাস’ নামে একটি ঘর প্রদান করেছে। সে তালিকায় একটি ঘর জুটেছে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ খানের। সে ঘর নির্মাণ কাজের শুরু হওয়ার কথা ছিল জুলাই মাসে। দিনের পর দিন যাচ্ছে, ঘরটি হচ্ছে না।  এটি  ঠিকাদারের গড়িমসি না অন্য কিছু এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, বীর নিবাস নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষ সকল কাগজপত্র দেখেই বীর নিবাস তৈরির অনুমোদন দেয়। ঠিকাদারের লোকজন জুলাই মাসের ১৩ তারিখ আমাদের বাড়িতে আসেন এবং ২০ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ ধরবেন বলে জানান। কিছুদিন পর ঠিকাদারের লোকজন বলেন, মালামালের দাম বেড়ে গেছে। ইট-বালুর খরচ বেশি। এভাবে ক’দিন যাওয়ার পর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করা হয়। পরে তিনি ঠিকাদারকে বলে দেন কাজ শুরুর জন্যে। সেমতে ঠিকাদার কাজ শুরু করার জন্যে ইট, বালু এনেছেন। এখানে আমাদের ঘর ছিল। ঠিকাদার কাজ করবে বলে আমাদের পুরাতন ঘর বিক্রি করে দিয়েছি। ঠিকাদার ২৭ আগস্ট কাজ শুরু করবে বলে আমরা মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেছি। ওইদিন ইঞ্জিনিয়ার, ঠিকাদার এবং রাজমিস্ত্রি কেউ আসেননি। পরে ঠিকাদার জানালেন, ৪ সেপ্টেম্বর কাজ ধরবেন। সে দিনও আসেননি। পরেরদিন ঠিকাদার মোবারক আমাদের জানান, আমাদের কাজ বন্ধ রাখার জন্যে ইউএনও অফিসে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আপনারা উপজেলায় গিয়ে কথা বলুন। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ খানের স্ত্রী প্যারালাইসিসের রোগী। তার থাকা-খাওয়া এবং বাথরুমসহ বিভিন্ন সমস্যায় পরিবারের লোকজনকে কষ্ট স্বীকার করতে হচ্ছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস নির্মাণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় সদর উপজেলা হলরুমে। ওই সভায় ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নানান অভিযোগ শুনেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউএনও। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাজের অনিয়মে ঠিকাদারকেও কাজের অগ্রগতি বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী                         অফিসার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এ সময় সেমিনার কক্ষে মূল ঠিকাদার কাজ না করে অন্য ঠিকাদারকে কাজ দিয়েছেন মর্মে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে উঠেন, ভারপ্রাপ্ত ঠিকাদার দিয়ে আমাদের নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।
ঠিকাদার মোঃ মোবারক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে বিধায় কাজ বিলম্ব করছিলাম। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ খানের ভাবী হোসনেয়ারা কাজ বন্ধ রাখার অভিযোগ করেছেন ইউএনও বরাবর। এ জন্যেই কাজ বন্ধ রয়েছে। 
এ বিষয়ে মৈশাদী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার মিশু দেবনাথ জানান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ হেলাল চৌধুরী স্যারের নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তবে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ খান ওই ভিটে বাড়িতে ৩০ বছরের অধিক বসবাস করেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। হোসনেয়ারার অভিযোগের সাথে মিল পাইনি। আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ে রোববার ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বসবো। তিনি আরো জানান, আমরা অনেক আগেই এ ভূমির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বীর নিবাসের জন্যে সুপারিশ করেছি। সে সুবাদেই বীর নিবাসের অনুমোদন মিলেছে।

সর্বাধিক পঠিত