পালবাজার আড়তগলির সড়কটির বেহাল দশা
সংস্কার দাবি এলাকাবাসীর
চাঁদপুরের প্রসিদ্ধ ও প্রাচীন পালবাজারের কাঁচামালের আড়তগুলোর সামনের সড়কটি বেহাল দশায় আছে। দীর্ঘ বছর ধরে সড়কটির ভগ্নদশা। পালবাজারের কাঁচামালের এই আড়তগুলো বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চাঁদপুর শহরের একমাত্র পাইকারী সবজির বাজার হলো এই পালবাজারের আড়তগুলো। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৪৫টি আড়তঘর নিয়ে এই ঐতিহ্যবাহী কাঁচামালের পাইকারী বাজারটি সদরের ও প্রতিটি উপজেলার মানুষদের কাঁচা সবজি ও তরকারির চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে। এই কাঁচামালের আড়তগুলোতে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল বিশেষ করে ভোলা, যশোর, বরিশাল, ঈশ্বরদী এবং চাঁদপুরের আশপাশের চরাঞ্চল হতে প্রতিদিন প্রায় অর্ধকোটি টাকার সব ধরনের সবজি (তরকারি) তথা আলু, বরবটি, কইডা, দুন্দুল, বেগুন, ডাটা, মিষ্টি কুমড়ো, বেগুন, পুইশাঁক, লাল শাকসহ সব ধরনের কাঁচামাল নদী পথে ও সড়ক পথে পালবাজারের কাঁচামালের আড়তগুলোতে আসছে। তবে অধিকাংশ সবজি নদী পথে এসে চৌধুরী ঘাটে নোঙর করে। ফলে সেখান থেকে মাল আনলোড করে পালবাজার পর্যন্ত আনতে আড়তদাররা তাদের নিজস্ব বা ভাড়া করা রিক্সাভ্যান গাড়িই বেশি ব্যবহার করে থাকেন। এসব কাঁচামালের আড়তগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ টাকার সবজি তরকারি বিক্রি হয়। উপজেলার প্রতিটি বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতারা পালবাজারের এসব কাঁচামালের আড়ত হতে তাদের চাহিদা মতো সব ধরনের কাঁচা সবজি কিনে নিয়ে যান। এই বাজারে সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত চলে এসব সবজি বেচাকেনা। কেউ কেউ নিজ এলাকা হতে সিএনজি অটোরিকশা, অটোবাইক নিয়ে এসে সবজি কিনে সেসব অটোবাইক ও সিএনজি বোঝাই করে মাল নিয়ে যাচ্ছেন। আড়তগলির এ সড়কটির ছোট-বড় অনেক গর্তে প্রায়শই এসব যানবাহনের চাকা পড়ে মাল এবং বাহন ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা যায়। আবার যেসব ভ্যান গাড়িতে করে কাঁচামালগুলো বাজারে ঢোকানো হয়, সেসব ভ্যানের এক্সেল ভেঙ্গে যায় হরহামেশাই। এমনটাই জানালেন আঠারো বছরের পুরানো ভ্যান চালক সাজু দেওয়ান। এ কাঁচা মালের আড়তগুলোতে মাল টানেন এমন সব ভ্যান চালকই জানালেন তাদের এ ক্ষতির কথা। কখনো কখনো লোড গাড়ি গর্তে পড়ে গিয়ে হন বিড়ম্বনার শিকার। তার উপর বর্ষার দিনে এসব গর্তে পানি জমে থাকার কারণে পথচারী চলাচলেও সমস্যা হয়।
এই কাঁচামালের গলিটি দিয়ে অত্র এলাকার বাসিন্দাসহ স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাও যাতায়াত করেন। সুতরাং এই সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এই সড়কটির ব্যাপারে পালবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব তপাদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটির সংস্কার হয়নি, গেলো বিশ বছরে এ সড়কটি সংস্কারের ছোঁয়া পায়নি। তিনি আরো বলেন, আমরা অনেক আড়তদার নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে যার যার আড়তের সামনের গর্তগুলো নিজস্ব অর্থায়নে বহুবার ঠিক করেছি। কিন্তু তা টেকসই হয় না। বর্ষা এলে নষ্ট হয়ে যায়, যানবাহন চলাচলে নষ্ট হয়ে যায়। মাহাবুব তপাদার, নজরুল ইসলাম স্বপন, সৈয়দ আহমেদ, সালাম মিয়া, মজিবুর রহমান বেপারী, মিজানুর রহমান হাওলাদারসহ পালবাজারের সকল কাঁচামাল আড়তদারদের দাবি, এ সড়কটি যেনো মজবুত করে সংস্কার করে দেয়া হয়। এ বিষয়ে তারা পৌর ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোহেল রানা ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমানের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।