• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ফরিদগঞ্জে দুই মাদক কারবারি গ্রুপের দ্বন্দ্ব

ঘরবাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ॥ আটক ১২

প্রকাশ:  ০২ আগস্ট ২০২২, ১২:৫৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 ফরিদগঞ্জে মাদক কারবারি দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে একটি গ্রুপ ফরিদগঞ্জের ও অপরটি পাশর্^বর্তী উপজেলা হাইমচরের। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হাইমচর এলাকার কথিত আগুন বাহিনীর লোকজন পুলিশবাহী একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাংচুর করে। এ ব্যাপারে অটোরিকশা চালক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে ১২জনকে আটক করেছে। ঘটনাটি ঘটে ৩১ জুলাই রোববার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের বিশকাটালী গ্রামে ঘটে।
আটককৃতরা হলো : বিশকাটালী গ্রামের কাদির বেপারী (৩৯), মোঃ সোহাগ (১৯), রাকিব খন্দকার (২১), মোঃ আল-আমিন (২৫), মাসুদ মোল্লা (৪০), মোঃ কবির হোসেন (৩৭), ফজলে রাব্বি (২০), চরদুঃখিয়া গ্রামের মোঃ আহসান হাবিব মিঠু (২০), হাইমচরের চরকৃষ্ণপুর গ্রামের জাহিদ হাসান রিফাত (১৯), চরভাংগা গ্রামের মোঃ ফুয়াদ আলম পাটওয়ারী (২৮), রাসেল গাজী (৩৫) ও পশ্চিম চরকৃষ্ণপুর গ্রামের মোঃ আতাউর রহমান সুজন (২৬)।
জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের বিশকাটালী এলাকায় ৩১ জুলাই রোববার মাদকসেবী দু’গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় আগুন বাহিনীর হামলায় ১০টি বসতঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে শতবর্ষী ফাতেমা বেগমসহ অন্তত ৮/১০জন আহত হয়েছে। তাছাড়া ৩টি খড়ের গাদায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের মধ্যে মোঃ বোরহান উদ্দিন, তহমিনা, ফাতেমা বেগম জানান, রোববার বিকেলে হাইমচর এলাকার (আগুন বাহিনী নামে পরিচিত) আল-আমিন, জয় ও আরিফের সাথে ফরিদগঞ্জ এলাকার তানজিল ও রাজনের মারামারি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিন সন্ধ্যায় হাইমচরের আল-আমিন ও জয়ের নেতৃত্বে আগুন বাহিনীর প্রায় শতাধিক যুবক ফরিদগঞ্জের বিশকাটালী গ্রামের বেপারী বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাণ্ডব চালিয়ে কমপক্ষে ১০টি বসত ঘর কুপিয়ে ভাংচুর করাসহ ৩টি খড়ের গাদা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তাদের হামলার শিকার হয়ে শতবর্ষী এক বৃদ্ধাসহ অন্তত ৮/১০জন আহত হয়। এ সময় নারী-পুরুষ আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে পড়ে। ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে পুলিশ সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশের সামনেই ভাংচুর করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে সরে পড়লে পুলিশের ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশাটি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমানে এলাকাটি পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। একই বাড়ির মেজর আঃ খালেদের বসত ঘরও ভাংচুরের শিকার হয়। মেজর আঃ খালেদের অনুরোধে ফরিদগঞ্জ ও হাইমচর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।
এ বিষয়ে চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শাহাজাহান বিএসসি জানান, সৃষ্ট ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছি। তাছাড়া কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়। তিনি আরো জানান, হামলার কারণে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। হয়রানি থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য পুরুষদের নিরাপদে থাকার পরামর্শ দেয়ার কথার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ সত্যিকারের দোষীদের গ্রেফতার করুক, তবে নির্দোষ ব্যক্তিরা যেন হয়রানির শিকার না হয়।
এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শহীদ হোসেন সোমবার বিকেলে জানান, মাদক কারবারী দুগ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। সিএনজি অটোরিকশা ভাংচুরের ঘটনায় চালক রাকিব হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে আসামী করে মামলা করেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে আটক করেছে। তাদের ১ আগস্ট সোমবার বিকেলে হামলাকারী ও হামলার শিকার কোনো পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

সর্বাধিক পঠিত