• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

মতলব দক্ষিণে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু

প্রকাশ:  ১৭ জুলাই ২০২২, ১২:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

মতলব দক্ষিণে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে ওই যুবককে হত্যা করা হয়েছে। এ মৃত্যুর ঘটনায় নিহত ওই যুবকের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে গত ১২ জুলাই মঙ্গলবার মতলব দক্ষিণ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে একই বাড়ির অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক ওসমান গণি এবং অটোরিকশা চালক আল-আমিনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার দুদিন পর গত বুধবার সকালে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্যে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশ।  
নিহত ফারুক মিয়া মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বাড়ৈগাঁও গ্রামের জলেমান্দ বাড়ির মোঃ বাচ্চু ভাণ্ডারীর বড় ছেলে। ব্যক্তিগত জীবনে ফারুক মিয়া বিবাহিত এবং তিন ছেলের জনক।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ফারুক মিয়া নারায়ণপুর বাজারে ভাড়া বাসায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। ঈদুল আজহার দিবাগত রাতে অটোরিকশা চালক আল-আমিন দাওয়াত দিয়ে ফারুক মিয়াকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। রাতে খাবার খাওয়ার পর ফারুক মিয়া নারায়ণপুরে তার বাসায় চলে আসতে চাইলে আল-আমিন যেতে নিষেধ করে তাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। ওইদিন রাতের কোনো সময় ফারুক মিয়ার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত রোববার (ঈদের দিন) ফারুক মিয়া বাড়িতে যান। ওইদিন রাত ১০টার পর একই বাড়িতে তার ফুফুর ঘরে ঘুমাতে যান। গত সোমবার সকালে ওই ঘরে ফুফুর পরিবারের লোকজন ফারুককে দেখতে না পেয়ে বিষয়টি ফারুকের বাবা বাচ্চু ভাণ্ডারীকে জানান।
এর কিছুক্ষণ পর ওই বাড়ির অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক ওসমান গনি এবং অটোরিকশা চালক আল-আমিন এসে ফারুকের বাবাকে জানান, ফারুক বাড়ির পাশের একটি আমগাছের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে তারা দুজন তড়িঘড়ি করে ওই গাছ থেকে লাশটি নামিয়ে পুলিশকে না জানিয়ে দ্রত কবরস্থ করার জন্যে ফারুকের পরিবারকে চাপ দেয়। তাদের কথায় রাজি হয় ফারুকের পরিবার। দাফন করতে গিয়ে ফারুকের বাবা ও স্থানীয় লোকজন লাশটির গলা, বুক ও পা সহ বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। এরপরও লাশটি দাফন করেন তারা।
নিহত ফারুক মিয়ার গোসলদানকারী মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী একই বাড়ির মোঃ রাকিব বলেন, আমি লাশ গোসল করানোর জন্যে প্রস্তুতি নিয়ে দেখি লাশের গলার পাশে, বুকে এবং পায়ে আঘাতের চিহ্ন। তখন লাশ গোসল দিতে অস্বীকৃতি জানাই। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক ওসমান গণি এটা কিছুই না বলে রাকিবকে গোসল করানোর জন্যে চাপ দেন এবং এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলতে নিষেধ করেন।
আটক ওই দুই ব্যক্তির সন্দেহজনক আচরণ, দ্রত লাশ দাফনে তাদের তৎপরতা এবং লাশের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্নের কথা মনে করে ফারুকের পরিবারের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়। স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানান ফারুকের বাবা বাচ্চু ভাণ্ডারী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিবার ও আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আল-আমিন ও অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক ওসমান গণিকে তাদের বাড়ি থেকে আটক করে।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, আটক দুই সন্দেহভাজন আসামীকে কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে। আর কবর থেকে উত্তোলন করা ফারুক মিয়ার লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে চাঁদপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে।

 

সর্বাধিক পঠিত