বিদ্যালয় মাঠে গরু-ছাগলের হাট, দুর্ভোগ চরমে
দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কচুয়া উপজেলার তেতৈয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গরু-ছাগলসহ সাপ্তাহিক হাট বসানোর অভিযোগ উঠেছে ইজারাদারের বিরুদ্ধে। এতে গরু ছাগলের মলমূত্রের দুর্গন্ধ আর মাঠ কর্দমাক্ত হওয়ায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয় মাঠে গরুর হাট বসানোকে ঘিরে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের ৬টি স্থানে গরুর হাটের ইজারা প্রদান করে কচুয়া উপজেলা প্রশাসন। ইজারাপ্রাপ্ত বাজারগুলো হলো উজানী বাজার, খিড্ডা বাজার, সিংআড্ডা বাজার, আঃ রব মোল্লা সুপার মার্কেট, তেতৈয়া আদর্শ মোল্লা মার্কেট ও তেতৈয়া খামার বাড়ি সংলগ্ন বাজার এবং উত্তর নোয়াগাঁও বায়তুন নূর মসজিদ মাঠ।
সোমবার সরজমিনে গেলে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা বিদ্যালয় ছুটির পর প্রতিদিন বিকেলে এই মাঠে খেলাধুলা করতাম। এখন গরুর বাজার দেয়ার কারণে আমরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
স্থানীয়রা জানায়, গরু ছাগলের মলমূত্রে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়ে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। মাঠ নোংরা থাকায় ছেলেমেয়েরা স্কুলে এসে খেলাধুলাও করতে পারে না। স্কুল খুললেই তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে। প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম অর্থের বিনিময়ে এ গরুর হাট বসার বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন।
তেতৈয়া আদর্শ মোল্লা মার্কেট নামে একটি গরু ছাগলের হাট ২৪ হাজার ৫শ’ টাকা দিয়ে ইজারা নেন জামাল হোসেন। দরপত্রের শর্তে উল্লেখ রয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে গরু-ছাগলের হাট বসানো যাবে না। কিন্তু জামাল হোসেন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় সে নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে গরুর হাট বসিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামাল হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের সভাপতিকে অবহিত করে আমি স্কুল মাঠে গরু-ছাগলের হাট বসিয়েছি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম পাটওয়ারী জানান, আমাকে না জানিয়ে তারা স্কুল মাঠে গরুর হাট বসিয়েছে। গরুর হাট বসানোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে কিনা বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি এটি এড়িয়ে যান।
কচুয়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম আখতার হোসাইন বলেন, স্থানীয়রা আমাকে বিষয়টি অবহিত করলে গরুর হাট বন্ধ করার জন্যে আমি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোতাছেম বিল্যাহ জানান, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গরুর হাটের ইজারা প্রদান করা হয়নি। যদি কেউ কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গরুর হাট বসায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।