চাঁদপুর মেরিন একাডেমিতে ছাত্রদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
চাঁদপুর ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ২৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে একাডেমির শতাধিক শিক্ষার্থী ফেস্টুন নিয়ে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে এই প্রতিবাদ করে।
গত তিনদিন ধরে পরপর তিন দফায় হামলার ঘটনা ঘটলেও একাডেমি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে আটক না করায় এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের আটকের দাবি জানান এবং এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
চাঁদপুর মেরিন একাডেমির ফাইনাল বর্ষের শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার একাডেমির শিক্ষার্থীরা পাশে নদীর পাড়ে মাঠে খেলতে যায়। সেখানে তাদের সাথে স্থানীয় সোহান নামে স্থানীয় এক যুবকের সাথে বাকবিত-া ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোহানের নেতৃত্বে স্থানীয় অজ্ঞাত যুবকরা শিক্ষার্থীদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। পরের দিন সকালে সোহানের পরিবারের কাছে অভিযোগ করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, অভিভাবকরা বিচার না করে উল্টো স্থানীয় ১৩নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলরের নেতৃত্বে ২৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে এবং রাতে তিন দফায় হামলা করেন। তিন দফার হামলায় মেরিন একাডেমির সাইফুল ইসলাম, মোঃ রুহুল আমিন খান রণি, কাউসার ইসলাম, আছলাম শেখ, ফারহান আহমেদ, দ্বিতীয় দিনে কায়েস মাহমুদ, জনি, স্টাফ কিবরিয়িসহ ১০-১২ জন আহত হয়। তাদের হামলার নির্মমতা প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভির ফুটেজে ধারণ করা রয়েছে। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত আসামীদেরকে আটক করতে হবে। না হয় তারা আরো বড় আন্দোলন কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন মেরিন একাডেমির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
চাঁদপুর ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির অধ্যক্ষ ড. প্রকৌশলী মোঃ সাখাওয়াত আলী জানান, আমি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যতটুকু জেনেছি তা সত্যিই দুঃখজনক। এই ধরনের ঘটনা আমাদের কাম্য নয়। আমি ঘটনার সাথে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলবো। সত্যতা পেলে অবশ্যই দোষীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাবো। এই অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যেন না হয় এবং এই প্রতিষ্ঠানের সম্মান রক্ষা করা এলাবাসীরও দায়িত্ব।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, বিষয়টি মূলত ভুল বুঝাবুঝির কারণে হয়েছে। আমরা উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার কথা বলেছি। যাতে বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে আর বাড়াবাড়ি না হয় সে জন্যে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার কথা বলেছি। এ বিষয়ে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এ ঘটনার পর বেলা সাড়ে ১২টায় চাঁদপুর মেরিন একাডেমির অধ্যক্ষ ও চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় তলায় শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসেন। এ সময় তাদের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা এই তিনদিন ধরে তিন দফায় হামলার ঘটনা ঘটলেও একাডেমি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এবং আইনশৃঙ্খলা কাউকে আটক না করায় এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি এই ঘটনায় তারা একাডেমি কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতাকে দোষারোপ করেন এবং তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।
এই ঘটনায় বর্তমানে চাঁদপুর মেরিন একাডেমিতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সামাল দিতে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ সেখানে অবস্থান করতে দেখা গেছে।