বিয়ে করেই যুদ্ধের ময়দানে ইউক্রেনের যুগল
২০১৯ সালে কিয়েভের এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তাদের পরিচয়। ধীরে ধীরে তা গড়ায় প্রেমে। ইয়ারিনা আরিভা এবং ভিয়াতোস্লাভ ফারসন নামের এই প্রেমিকযুগল একসময় সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করবেন। আগামী মে মাসে তাদের বিয়ে করার কথা ছিল। সে জন্য সব চূড়ান্তও করে ফেলেছিলেন। তবে রাশিয়ার হঠাৎ হামলার পর ইউক্রেইনে বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে সব পরিকল্পনা পাল্টে যায় তাদের।
রাশিয়ার হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টার মাথায় চার্চে গিয়ে বিয়ে করেন তারা। তবে বিয়ের পরে হানিমুনে নয়, সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে নামার সিদ্ধান্ত নেন এ যুগল। বিয়ের প্রথম দিন পেরুনোর আগেই ইউক্রেইনের হয়ে লড়াই করার শপথ নেন তারা।
এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসী হামলা থেকে ইউক্রেইনকে রক্ষায় বিয়ের পরপরই অস্ত্র সংগ্রহে নেমেছে এই নবদম্পতি। তারা দুজনেই যোগ দিয়েছেন টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স ফোর্সে। ইউক্রেইন সশস্ত্রবাহিনীর এই শাখা স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত।
অস্ত্র সংগ্রহের পর আরিভা ও ফারসন পৌঁছান ইউরোপীয়ান সলিডারিটি দলের অফিসে। আরিভা বলেন, আমাদের পক্ষে যা সম্ভব হবে আমরা করবো। অনেক কিছুই করার আছে। শুধু এইটুকু প্রত্যাশা, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আবার সবকিছু আলো ঝলমলে হবে।
আরিভা আরও বলেন, নিজের দেশকে বাঁচাতে আপনিও এই যুদ্ধে নেমে পড়তে পারেন। এটাই এখন একমাত্র সমাধান।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর হামলা শুরু করে রাশিয়া। দ্বিতীয় দিনেই রাশিয়ার সেনারা দেশটির রাজধানী কিয়েভে পৌঁছে গেছে।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছে হোস্টোমেল বিমানঘাঁটির নিয়ন্ত্রণও নিয়েছে রাশিয়ান বাহিনী। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। রাশিয়ান সংবাদমাধ্যম ইন্টারফ্যাক্সের বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
এ অবস্থায় মলোটভ ককটেল বা পেট্রল বোমা তৈরি করে লড়াইয়ে অংশ নিতে স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ। অন্যদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে তারা। তবে যারা যুদ্ধে অংশ নিতে আগ্রহী তাদের মধ্যে রাইফেল বিলি করছে ইউক্রেইন সরকার। শুক্রবার সাধারণ মানুষের কাছে এরকম ১৮ হাজার অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে।