• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেধাবী ছাত্র পলাশের পাশে শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশ:  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৪৪ | আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

পলাশ দে। একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। এ বছরই চাঁদপুর পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। শ্রুতিলেখক দিয়ে সে পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষার ফলাফলও ভালো করেছে। হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে পলাশ। তার পাশে দাঁড়ালেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি। তার চিকিৎসা ও পড়ালেখার দায়িত্ব নিলেন তিনি।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পলাশ দের সাফল্যের সংবাদ চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশ হওয়ার পর এটি শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টিতে আসে। গতকাল তিনি পলাশ দে এবং তার বড় ভাই শিমুল দের সাথে কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী তাদের আশ^স্ত করেন।

পলাশরা বাবা-মা ও তিন ভাই-বোনসহ থাকতো পুরাণবাজার হরিসভা এলাকায়। মেঘনার করাল গ্রাসে বাড়ি বিলীন হয়েছে অনেকদিন আগে। এরপর থেকে চাঁদপুর শহরের ঘোষপাড়ায় বাবা-মাসহ ভাড়া বাসায় থাকে। বড় ভাই শিমুল দে এবং ছোট বোন জুঁই দে। আর্থিক অনটনের কারণে বড় ভাই পড়ালেখা করতে পারেনি। কিন্তু সে নিজে পড়ালেখা না করলেও ছোট ভাই পলাশকে পড়ালেখা থেকে বিচ্যুত হতে দেয়নি। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, জন্মগতভাবে এক চোখে সমস্যা পলাশ দে’র। ধীরে ধীরে দৃষ্টি হারাতে থাকে পলাশ। এইচএসসি পরীক্ষার বছরখানেক আগ থেকে দু চোখেই প্রায় দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলে পলাশ। পরীক্ষার আগে পুরোপুরি দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে সে। এমতাবস্থায় নিজে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ না থাকার কারণে শ্রুতিলেখক দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্র ছিলো চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ। অদম্য এই ছাত্রটি ৪.৭ জিপিএ নিয়ে ভালো ফলাফল করেছে পুরানবাজার কলেজ থেকে। প্রথম থেকেই তাকে সহযোগিতা করে আসছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকবৃন্দ। হতদরিদ্র পরিবারের হওয়ায় তার ভর্তির সময় থেকে শুরু করে সব কিছুতে কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকবৃন্দের আন্তরিক সহযোগিতা ছিল।

শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি গতকাল ১৯ ফেব্রুয়ারি পলাশের বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক তিনি যোগাযোগ করেন পলাশ দে’র পরিবারের সাথে। মোবাইলে পলাশ দে এবং তার বড় ভাই শিমুল দে’র সাথে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানান তার ভালো ফলাফলের জন্যে। উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তার অদম্য স্পৃহার জন্যে। সাহস যোগান তার পরিবারকে। তিনি নিজে পলাশ দে’র পড়ালেখা এবং চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন তাৎক্ষণিকভাবে। ইতিমধ্যেই তিনি চক্ষু বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে চিকিৎসা অগ্রগতি করেছেন।

ডাঃ দীপু মনি অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদারকে বলেছেন তাকে অতিসত্বর ঢাকা নিয়ে যাওয়বার জন্যে।

শিক্ষামন্ত্রী পলাশ দে’র পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় দুই ভাই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা অশ্রুসজল হয়ে পড়েন। বারবার কৃতজ্ঞতা জানাতে থাকেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে। তারা দুই ভাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

পলাশ দে’র পাশে দাঁড়ানোয় শিক্ষামন্ত্রীকে অধ্যক্ষ এবং পুরান বাজার কলেজ পরিবারও কৃতজ্ঞতা জানান।

সর্বাধিক পঠিত