যেকোনো দিন ইউক্রেনে হামলা করতে পারে রাশিয়া : যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ইস্যুতে উত্তেজনার পারদ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অভিযোগ, যেকোনো দিন ইউক্রেনে হামলা চালানোর নির্দেশ দিতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তবে এই পরিস্থিতিতেও কূটনৈতিক পন্থায় সংকটের সমাধান হতে পারে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
ADVERTISEMENT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বাসভবন হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার জ্যাক সুলিভান বলেছেন, কয়েকদিন বা সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দিতে পারেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রোববার ‘ফক্স নিউজ সানডে’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন একটি মাঝামাঝি অবস্থানে আছি। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া যেকোনো দিন সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। অথবা এটি এখন থেকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেও হতে পারে। অথবা রাশিয়া হয়তো কূটনৈতিক রাস্তাও বেছে নিতে পারে।’
এদিকে এবিসি চ্যানেলর ‘দিজ উইক’ অনুষ্ঠানে সুলিভান বলেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে হামলা চালানোর নির্দেশ দেবেন, এমন সম্ভাবনা বেশ জোরালো। এটি আগামীকালও হতে পারে আবার, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেও হতে পারে। সীমান্তে সৈন্য সমাবেশের মাধ্যমে পুতিন এমন এক অবস্থানে চলে গেছেন, যেখান থেকে তিনি আগ্রাসী আচরণ করতে সক্ষম।’
ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তা দাবি করেন, সামনের সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে একটি পূর্ণমাত্রার অভিযান চালাতে যে ধরনের সামরিক সক্ষমতা দরকার, রাশিয়া তার প্রায় ৭০ শতাংশ এখন ইউক্রেন সীমান্তে জড়ো করে ফেলেছে। এর একদিনের মাথায় টেলিভিশন দেওয়া সাক্ষাৎকারে যেকোনো সময় ইউক্রেনে হামলা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেন জ্যাক সুলিভান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দু’জন মার্কিন কর্মকর্তা শনিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানান, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হতে মার্চের শেষ পর্যন্ত যে ধরনের আবহাওয়া থাকবে তা রাশিয়াকে ভারী সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনের জন্য সবচেয়ে ভালো সুযোগ দেবে।
এই কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, রাশিয়ার এই অভিযানের কারণে ৫০ হাজার পর্যন্ত বেসামরিক মানুষ মারা যেতে পারে। তারা আরও অনুমান করছেন, এরকম একটি রুশ আক্রমণের মুখে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পতন ঘটবে কয়েকদিনের মধ্যেই। এর ফলে ইউরোপে এক বিরাট শরণার্থী সংকট দেখা দেবে, কারণ লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাবে।
এদিকে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
পূর্ব ইউরোপে উত্তেজনা কমাতে সোমবার মস্কো সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে ফরাসি প্রেসিডেন্টের। এর একদিন আগে হওয়া এই ফোনালাপের ব্যপ্তি ছিল ৪০ মিনিট।