• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

শাহরাস্তিতে ভাই-বোনের সম্পত্তি আত্মসাৎ করার অপচেষ্টায় আদালতে মামলা

প্রকাশ:  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৫৬
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

শাহরাস্তি উপজেলার কাজির কামতা পাটোয়ারী বাড়ির মৃত গোলাম হোসেন পাটোয়ারীর ছোট ছেলে জহিরুল হক পাটোয়ারী তার আপন ভাই ও বোনের সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্যে নানান কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জহিরুহল হক পাটোয়ারী একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরিজীবী। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের  টিটিইর পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। চাকুরিকালীন আয়ের সাথে ব্যয়ের অসামঞ্জস্য তৈরি করে তার নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন চতুর্থ তলা বিশিষ্ট  বিশাল অট্টালিকা, সেমি-পাকাসহ ৩টি ঘর। এতেই শুধু ক্ষান্ত হননি, তিনি প্রতারণার বিশাল ফাঁদ করে তার আপন বড় ভাই আব্দুল হক পাটোয়ারীর সম্পত্তিও আত্মসাৎ করেন। একই বাড়ির আঃ লতিফ, জয়নাল পাটোয়ারী গংয়ের কিছু সম্পত্তি এজবদল করার নাম করে তার অসহায় বড় ভাইকে বাদ দিয়ে কূটকৌশলে নিজের নামে জমি রেজিস্ট্রি করে নেন। ৩ বোনের নাম বাদ দিয়ে দুই ভাইয়ের নামে জালিয়াতি করে ওয়ারিশ সনদ উত্তোলন করেন। নিজ মেহের মৌজায় তার পৈত্রিক সম্পত্তিগুলো দুই ভাইয়ের নামে খারিজ  করিয়ে নেন।  লাকসাম নোয়াপাড়ায় পিতার খরিদকৃত সম্পত্তি জহিরুল হক পাটোয়ারী নিজে একক নামে বিক্রি করে দেন। পিতার সম্পত্তি অন্য সন্তানেরা দাবি করলে জহিরুল হক পাটোয়ারী  তাদের ভাই-বোনের নামে কুমিল্লা আদালতে মামলা দায়ের করেন।
জহিরুল হকের দুই ছেলে বাবলু ও বাবু ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকার অসহায় মানুষদের সাথে করে যাচ্ছেন প্রতারণা। এলাকার গণ্যমান্য কোনো সামাজিক ব্যক্তিকেই তোয়াক্কা করেন না তারা। জানা যায়, জহিরুল হক পাটোয়ারীর ছেলেরা মাদকাসক্ত এবং তাদের নেতৃত্বে চলে মাদকের কারবার। বাপ-ছেলেরা মিলে এলাকায় প্রতারণার রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে। জহিরুল হক এবার তার আপন বোনদের সাথে করে যাচ্ছেন প্রতারণা। পিতার সম্পত্তি থেকে কীভাবে তাদের বঞ্চিত করা যায় তার ফাঁদ তৈরি করেন। কিন্তু  তার বোন রোকেয়া ও শামসুর নাহার তা বুঝতে পেরে তাদের পিতার সম্পত্তির অংশ  কাজির কামতা মৌজার বিএস ৪৪নং খতিয়ানে ০০.১৭.৭০ শতাংশ ভূমি তারেক আজিজের নামে দলিল করে দেন। তারেক আজিজের নামে সম্পত্তি দলিল করে দেয়ার কারণে জহিরুল হক পাটোয়ারী ও তার ছেলেরা জহিরুল হকের বোনদের সম্পত্তি দখল করার পাঁয়তারা করেন। তারেক আজিজ বিষয়টি জানতে পেরে চাঁদপুর আদালতে উক্ত ভূমির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। নিষেধাজ্ঞা মামলার কারণে শাহরাস্তি ভূমি অফিস থেকে এমএ মান্নান সরেজমিনে ৩০ ডিসেম্বর তদন্তে আসেন। তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করার জন্যে তিনি উভয়পক্ষের কাগজপত্র নিয়ে চলে যান।
এর পরপরই তারেক আজিজ ও তার পিতা আবুল খায়েরের ওপর জহিরুল হক ও তার ছেলেরা এবং ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তারেক আজিজ বাদী হয়ে চাঁদপুর বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ১ ফেব্রুয়ারি ১০৭/১১৭ (সি)ধারার বিধান মতে ৮৮/২২নং মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, তদন্ত কর্মকর্তা উভয় পক্ষের কাগজপত্র নিয়ে চলে যাওয়ার পরপরই তারেক আজিজ ও তার পিতা চাঁদপুরে চলে আসতে চাইলে তাদেরকে লক্ষ্য করে জহিরুল হক, লাভলু, বাবু, সীমান্ত, আসিফ ও ভাড়াটিয়া কিছু সন্ত্রাসী দা, ছেনি, বাঁশের কঞ্চি নিয়ে দৌড়ে আসে এবং  ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। স্থানীয়রা ওই মুহূর্তে হামলাকারীদের কবল থেকে তারেক আজিজ ও তার পিতাকে উদ্ধার করে। এ সময় তারেক আজিজ ও তার পিতাকে উদ্দেশ্য করে জহিরুল হক ও তার ছেলেরা প্রকাশ্যে বলেন যে, রাস্তাঘাটে একা পেলে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে এবং তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ফেলবে।
এ বিষয়ে জহিরুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি নিজেকে অসুস্থ বলে এড়িয়ে যান। তার ছেলেরা বলেন, আমার ফুফুরা ওয়ারিশ পাবে ঠিক, কিন্তু আমরা দেখেশুনে দিবো।

সর্বাধিক পঠিত