রাশিয়াকে যুদ্ধে জড়ানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র : পুতিন
রুশ প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ইউক্রেনে রাশিয়াকে যুদ্ধে জড়ানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর উত্তেজনা অনেক বেড়েছে। তবে উত্তেজনাপূর্ণ এই ইস্যুতে গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এবারই প্রথম মুখ খুললেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
পুতিন অভিযোগ করেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে আমেরিকা এবং এই বিষয়টিকে ব্যবহার করেই মস্কোর বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাই ওয়াশিংটনের লক্ষ্য। এছাড়া ইউরোপে সামরিক জোট ন্যাটোর কর্মকাণ্ড নিয়ে রাশিয়ার উদ্বেগ থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র তা অগ্রাহ্য করেই চলেছে।
মঙ্গলবার মস্কোতে সাংবাদিকদের সামনে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র খুব বেশি উদ্বিগ নয় বলে আমার কাছে মনে হচ্ছে... তাদের (ওয়াশিংটনের) প্রধান কাজ হচ্ছে রাশিয়ার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা। আর এই লক্ষ্য পূরণে ইউক্রেন পশ্চিমাদের কাছে একটি ইস্যু মাত্র।’
ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।
ADVERTISEMENT
অবশ্য ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা বরাবরই বলে আসছে যে, পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে হামলা হলে তারা রাশিয়ার অর্থনীতিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবে। এছাড়া ইউক্রেনে হামলা হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেজ্ঞা আরেপের হুঁশিয়ারি বরাবরই দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।
১৯৪৯ সালে গঠিত হওয়া নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অরগ্যানাইজেশনকে (ন্যাটো) রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে; এবং ঐতিহাসিকভাবেই বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপত্যবাদের বিরোধী।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো বলছে, পশ্চিমা সামরিক জোটে ইউক্রেনের যোগ দেওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন এবং অন্যান্য ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। রাশিয়া যদি ইউক্রেনে হামলা চালায়, তাহলে এই হামলাই প্রথম হয়ে থাকবে না।