হাজীগঞ্জে অর্ধশত বছরের পথ বন্ধ করে বসতঘর নির্মাণ!
কমপক্ষে অর্ধশত বছরের চলাচলের পথ, করবস্থান ব্যবহারের পথে টিনের বেড়াসহ বসতঘর তৈরি করে চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছে একটি পক্ষ। এ ঘটনায় এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার প্রতিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলে আদালত পথ ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সেই অনুমতিকে গ্রাহ্য না করেই পথটি বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে যে দাগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে সেই দাগে কোনো সম্পত্তি নেই বলে দাবি করেন বিবাদী মীর হোসেন। ঘটনাটি হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল আমিন বিএসসির বাড়ি। এদিকে পথ বন্ধ করে দেবার বিষয়টি নিয়ে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ আব্দুল আজিজ রোববার সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
খোঁজ নিয়ে গেছে, ঐ ইউনিয়নের ৯৪নং নাটেহরা মৌজার বিএস ৬১৬নং খতিয়ানে বিএস ১৪১৭ দাগে .৪৩ শতক, বিএস ১৪১৭ দাগে .২৮ একর ও বিএস ১৪১০ দাগে .০৭ একর একুনে মোট .৭৮ একর ভূমিতে দীর্ঘ ৫৪ বছরের চলাচল ও কবরস্থানে যাওয়ার পথ বন্ধ করে বসতঘর নির্মাণ করছেন একই বাড়ির মৃত আলী আশ্রাফের ছেলে মোঃ মীর হোসেন, মোঃ জামাল হোসেন ও মোঃ কামাল হোসেন।
বিষয়টি নিয়ে গত বছর আদালতে ফৌঃ কাঃ বিধির ১৪৫ ধারায় অভিযোগ (নং- ৮৪৭/২০২১) করেন একই বাড়ির মৃত কলিম উদ্দিনের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল আমিন বিএসসি। আদালত উভয় পক্ষের কৌঁসুলির বক্তব্য শুনে এবং হাজীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে চলাচলের পথ (রাস্তা) উন্মুক্ত রাখা এবং মামলাটি নথিজাত করার নির্দেশনা প্রদান করে।
এ বিষয়ে বাদী মোঃ নুরুল ইসলাম বিএসসি চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, ঐ বাড়িতে আমরা ৫৪ বছর ধরে বসবাস করছি। তার পূর্ব থেকেই আমাদের ও পাশর্র্^বর্তী হিন্দু বাড়ির ক’টি পরিবার এবং এলাকার লোকজনসহ এই পথ দিয়ে চলাচল করছে। গত বছর বিবাদীরা বসতঘর নির্মাণের উদ্দেশ্যে ওই পথ মাটি দ্বারা ভরাট করেন। বিষয়টি নিয়ে আমি আদালতের দ্বারস্থ হই।
তিনি বলেন, এরপর আদালত চলাচলের পথ উন্মুক্ত রাখার নির্দেশনা দেয়। কিন্তু বিবাদীরা সেই নির্দেশনা অমান্য করে চলাচলের পথে বসতঘর নির্মাণ ও টিনের বেড়া দিয়ে পথ বন্ধ করে দেয়। এতে করে চারজন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের চলাচলের পথ এবং কবরস্থানে আসা-যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
বিবাদী মোঃ মীর হোসেন বলেন, যে দাগের ওপর বাদী অভিযোগ দিয়েছেন, সে অভিযোগের সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কারণ, ১৪১৭ দাগ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত আছে এবং ১৪১০ দাগে আমার কোনো মালিকানা নেই। বর্তমানে আমি ১৪১৯ দাগে বসতঘর নির্মাণ করছি।
হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ আব্দুল আজিজ বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিবাদী পক্ষকে আদালতের রায় মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছি। যদি তারা নির্দেশনা অমান্য করে, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।