চাঁদপুরের সর্বত্র বিক্ষোভ প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড়
দীপু মনিকে টার্গেট করা সুদূর পরিকল্পিত , ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হবে না
* দীপু মনিকে আঘাত করা মানে সরকাকে আঘাত করা * ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য চাঁদপুরের উন্নয়নকে ব্যহত করা * মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার দাবি
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এবং তাঁর পরিবারকে নিয়ে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে চাঁদপুর জেলার সর্বত্র বিক্ষোভ, প্রতিবাদ ও নিন্দা অব্যাহত আছে। দলের বাইরে শিক্ষক-ছাত্রসহ বিভিন্ন পেশার মানুষও রাস্তায় নেমেছে ওই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে রাজনীতিতে এমন একজন সজ্জন এবং সৎ মানুষের বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচার করায়। যারা মিথ্যাচার করেছে তাদের বিচার এবং শাস্তির দাবি জানিয়েছে চাঁদপুর জেলাবাসী। প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে দাবি করা হয়, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিকে টার্গেট করা সুদূর পরিকল্পিত। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অন্যতম দীপু মনিকে আঘাত করা মানে সরকাকে আঘাত করা। দীপু মনিকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা মানে সরকারকে তথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াস।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এবং তাঁর বড় ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসক ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়। জমি অধিগ্রহণ করার আগেই কয়েক শ’ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ করে একটা বিশেষ মহল। ডাঃ টিপুর সেখানে জায়গা আছে অভিযোগে বলা হলেও দেখা গেছে যে, ডাঃ টিপুর সেখানে কোনো জায়গা নেই। এছাড়া জেলা প্রশাসক যে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন তাতে তিনি যে উচ্চ মূল্যের কথা উল্লেখ করেছেন, সে প্রাক্কলনও তো প্রস্তুত ভূমি অধিগ্রহণ কমিটি করেছে। যেখানে ইউনিয়ন ভূমি অফিস, এসিল্যান্ড অফিস, এডিসি রেভিনিউ অফিস এবং সর্বোপরি জেলা প্রশাসক সম্পৃক্ত রয়েছেন। তাহলে এখানে জমির মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে কেনো? প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ সব প্রশ্ন রাখেন। বক্তারা বলেন, হাস্যকর এমন অভিযোগ পদ্মা সেতু নিয়ে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগও করা হয়েছিলো। তখন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক যে ষড়যন্ত্রকারীরা ওই ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছিলো, বর্তমানে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় নিয়েও একইভাবে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হলো। প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বলা হয়, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি ঢাকায় সাংবাদিক সম্মেলন করে পুরো বিষয়টি পরিস্কার করে দিয়েছেন। একইভাবে তাঁর বড় ভাই ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপু জমি সংক্রান্ত ব্যাখ্যা দিয়ে তার অবস্থানও পরিস্কার করেছেন। তাই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ষড়যন্ত্রকারী ও মিথ্যাচারকারীদের বিচার দাবি করছি।
শিক্ষামন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে প্রথমে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের বৃহৎ অংশ জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। এরপর শুরু হয় জেলাব্যাপী জোরালো প্রতিবাদ। যদিও এর আগে হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিশাল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়। গতকাল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়েছে ফরিদগঞ্জ ও কচুয়া উপজেলায়। এর আগে হয়েছে হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলায়। এছাড়া চাঁদপুর শহরে এক সপ্তাহ যাবত প্রতিদিনই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হচ্ছে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ চাঁদপুর শহরসহ জেলার সর্বত্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করছে। চাঁদপুর সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন এবং হাইমচর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যানদের নেতৃত্বে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়েছে। এছাড়া চাঁদপুর সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ ও পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ শিক্ষক পরিষদ প্রতিবাদ সভা করে। গতকাল চাঁদপুরের সকল সাংস্কৃতিক সংগঠন, নাট্য সংগঠন এবং কবি, সাহিত্যিক ও লেখকরা বিশাল মানববন্ধন করেছেন। এ সকল প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে বক্তারা বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারী কারা তা স্পষ্ট। তাদের বিচার করতে হবে, এবার সে যেই হোক। আমরা দল বা অন্য কিছু বুঝি না। তাদেরকে চাঁদপুর থেকে বিতাড়িত করতে হবে। তারা বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের লক্ষ্য হচ্ছে দীপু মনি, আর উদ্দেশ্য হচ্ছে চাঁদপুরের উন্নয়নকে ব্যহত করা। আমরা চাঁদপুরবাসী কস্মিনকালেও তা হতে দেবো না। ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হবে না। প্রত্যেক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার এবং চাঁদপুর থেকে বিতাড়িত না হলে আরো কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তারা এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।