ছেলের লাশের পাশে একলা মা
অবৈধভাবে ঢাকা থেকে হিলির উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা আহাদ পরিবহনের একটি বাস থেকে করোনা সন্দেহে মিজানুর রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহসহ তার মাকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ মে) ভোরে জয়পুরহাট-বগুড়া সড়কের হিচমি নামক স্থানে মরদেহটি নামিয়ে দেয়া হয়। মিজানুর রহমান পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর গ্রামের আতোয়ার হোসেনের ছেলে।
খবর পেয়ে জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন চন্দ্র রায় এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা সেখানে গিয়ে মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেছেন। মৃত মিজানুর রহমানের মা সোহাগী বেগম বলেন, আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিল।
স্থানীয় বম্বু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোল্লা সামছুল আলম বলেন, ছেলের মরদেহসহ ওই মাকে হিচমী এলাকায় বাস থেকে ভোরের দিকে নামিয়ে দেয়া হয়। ওই এলাকার নৈশপ্রহরীরা আমাকে খবর দিলে প্রশাসনকে আমি খবর দেই।
ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওসমান আলী জানান, মিজানুরের দীর্ঘদিন থেকে শ্বাসকষ্ট ও কিডনির সমস্যা ছিল। তার স্ত্রী ঢাকায় গার্মেন্টসসে চাকরির সুবাধে তিনি মাঝে মধ্যে ঢাকায় রিকশা চালানোসহ বিভিন্ন কাজ করতেন। দুই-তিনদিন আগে তিনি মাকে নিয়ে ঢাকা যান স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে তার মৃত্যু হওয়ায় আমরা গ্রামবাসীরাও মর্মাহত। তার কোনো করোনা উপসর্গ না থাকার কারণে মরদেহ জয়পুরহাট থেকে নিয়ে এসে দাফনের প্রস্ততি চলছে।
জয়পুরহাট সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পুলক সরকার বলেন, ঢাকার জিরানী বাজার থেকে মা ও ছেলে আহাদ পরিবহনের বাসে করে আসার সময় বাসের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। পরে বাসটি বাইপাস দিয়ে যাওয়ার সময় হিচমী এলাকায় তাদের নামিয়ে দিয়ে যায়।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন চন্দ্র রায় জানান, মৃত ব্যক্তি ঢাকায় কাজ করা তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। রাতে তার মা সোহাগী বেগম তাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি আসার সময় রাস্তায় বাসের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। এ সময় বাসের অন্য যাত্রীরা করোনা সন্দেহে তাদের বাস থেকে নামিয়ে দেয়। মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।