• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

একদিনেই সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা ১০৩৪, মৃত্যু আরও ১১ জনের

প্রকাশ:  ১১ মে ২০২০, ১৫:৫৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

মহামারি করোনাভাইরাস দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ২৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৩৪ জন। যা দেশে করোনা হানা দেয়ার পর সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৫ হাজার ৬৯১।

সোমবার (১১ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান।

 

তিনি নতুন সংযুক্ত একটিসহ মোট ৩৭টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও সাত হাজার ২৬৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় সাত হাজার ২০৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ২৯ হাজার ৮৬৫টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও এক হাজার ৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬৯১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১১ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৩৯-এ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২৫২ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুই হাজার ৯০২ জন।

নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ, ছয়জন নারী। আটজন ঢাকা বিভাগের, দুজন চট্টগ্রাম এবং একজন রংপুর বিভাগের। এদের মধ্যে সত্তরোর্ধ্ব একজন, ষাটোর্ধ্ব একজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব চারজন, চল্লিশোর্ধ্ব দুজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুজন এবং ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী একজন রয়েছেন।

গত রোববার (১০ মে) স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় বিগত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ হাজার ৭৩৮টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৮৮৭ জনের দেহে, যা সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও হয়েছে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড।

সোমবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ১৮৩ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন দুই হাজার ২৩৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬২ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ১৭৬ জন। সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে আট হাজার ৬৩৪টি। আইসিইউ শয্যা আছে ৩৩৫টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৩৬০ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ১২ হাজার ৯৮৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৪৩৯ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৭৬ হাজার ৬৪০ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৩৬ হাজার ৩৪৩ জন।

দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩০ হাজার ৯৫৫ জনকে।

বুলেটিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়। ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, আপনার সুস্থতা আপনার হাতে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা যেন স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলি।

চীনের উহান শহরে গত ডিসেম্বরে প্রথম শনাক্ত হলেও এখন গোটা বিশ্বই করোনাভাইরাসের কবলে। মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪২ লাখ। মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ৮৪ হাজার প্রায়। তবে প্রায় ১৫ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশে চলছে ছুটি। বন্ধ বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন। যদিও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া গত রোববার (১০ মে) থেকে শর্তসাপেক্ষে খুলে দেয়া হয়েছে দোকানপাট ও শপিংমলও।