জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার
হাইমচরে ইউএনওর উপর হামলার বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে
চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোঃ নূরুল আলম নিজামী বলেছেন, সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগের কারণে দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। ইলিশ সম্পদ রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিসহ সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সকলের চেষ্টা থাকলে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি সফল হবে। আমি জানতে পারলাম হাইমচরে সরকারি কর্মকর্তার (ইউএনও) উপর জেলেরা হামলা করেছে, এটি খুবই দুঃখজনক। সরকারি কর্মকর্তার উপর হামলা মানে সরকারের উপর হামলা করা। আমি বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি হিসেবে আপনাদেরকে বলবো, এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
গতকাল ৮ মার্চ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জাটকা রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে অভিযানে যাওয়ার পূর্বে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। সমন্বয় করে কাজটি করতে হবে। কারণ, যে কোনো অভিযানে যাওয়ার পূর্বে নিজেদের সক্ষমতার বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে।
নূরুল আলম নিজামী বলেন, মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাগুলো খুবই জরুরি। এসব সভায় সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না। কারণ, এই সভা কারো ব্যক্তির জন্যে নয়, জেলার সকল উন্নয়ন ও নিরাপত্তার বিষয় এসব সভায় জড়িত। কোনো কর্মকর্তা ৩ বারের অধিক সময় সভায় উপস্থিত না থাকলে তাদের বিষয়ে চিঠি দিয়ে আমাদেরকে অবহিত করবেন। তিনি বলেন, চাঁদপুর একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। এখানে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বসবাস। রাজনীতি ও প্রশাসনে লিডিং পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন। চাঁদপুর জেলা শতভাগ টিকাদান কর্মসূচি পালন করেছে। বিভাগের অন্য জেলায় যা করতে পারেনি। আমি পূর্ব দেখেছি চাঁদপুর জেলায় প্রায় ৪০-৪২টি সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। তাদের সাথে আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে।
নূরুল আলম নিজামী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আগে ও পরে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সমন্বয় করতে হবে। যাতে করে মুজিববর্ষ শতভাগ পালন করা যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল স্থানেই যেনো মুজিববর্ষ সঠিকভাবে পালন করা হয়। ওইদিন ৪০-৫০ হাজার মানুষের সমাগম হবে। সকল কর্মসূচিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সিভিল সার্জনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আগ থেকে সতর্ক অবস্থান নিতে হবে। আপনাদের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন। আমাদের এখানে এখনো কারো এই রোগ সনাক্ত হয়নি। এছাড়াও ইউএনওদেরকে বলছি, আপনারা করোনা ভাইরাস বিষয়ে সভা করবেন এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সচেতন করবেন। যারা অসুস্থ হয় কিংবা সর্দি, কাশি ও জ্বর হয় তারা যেন মাস্ক পরে থাকে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা কাজ শুরু করতে পারেন। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলায় কাজ শুরু হয়েছে। আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে সরকার কী বলছে, সরকারের পক্ষ থেকে বলার পরেই আপনাদের কাজ শুরু করতে হবে। কেউ বসে থাকতে পারবেন না। কারণ, এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হলে কেউ রক্ষা পাবেন না।
১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ পালনের ক্ষেত্রে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান নিরাপত্তার অভাব রয়েছে বলে সভায় বক্তব্য উত্থাপন করলে তার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার বলেন, জাতির পিতার জন্মশর্তবার্ষিকী হচ্ছে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অনুষ্ঠান এবং সরকার এ অনুষ্ঠানকে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এ ধরনের অনুষ্ঠানে কারো হঠকারিতা করা যাবে না। নিরাপত্তার জন্যে পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে হবে।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ জামাল হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মোঃ মিজানুর রহমান, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, এনএসআইর যুগ্ম পরিচালক মোঃ আজিজুল হক, মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ কুদ্দুছ। সভায় সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও তাদের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।