• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ইরি-বোরো ধানের চারা নিয়ে বিপাকে কৃষক

প্রকাশ:  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:৫৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

হাজীগঞ্জে ইরি-বোরো ধানের চারা (স্থানীয় ভাষায় জালা/হালি) নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। বীজ ধানের প্যাকেট ক্রয়ের সাথে চারা বিক্রির কোনো মিল না থাকায় চারা উৎপাদনে আগ্রহ হারাতে বসেছে কৃষককূল। তবে এ জাতীয় বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রণোদনা কিংবা সহায়তা নেই বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইরি-বোরো মৌসুমে লাভের আশায় এক শ্রেণির কৃষক বাজার থেকে বীজ ধান ক্রয় করে তা থেকে চারা উৎপাদন করে বাজারে বিক্রি করে থাকে। অনেকটা মৌসুমী ব্যবসায়ীর মতো এক শ্রেণির কৃষককূল ইরি-বোরো মৌসুমে কিছু আয় করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এ জাতীয় কৃষকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আবার অনেক কৃষক আছে বীজ চারা উৎপাদন শেষে নিজের ব্যবহারের চারা রেখে দিয়ে বাকি চারা বাজারে অন্য কৃষকের কাছে বিক্রি করে দেন। ঠিক এই জাতীয় কৃষকদের জন্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রণোদনা কিংবা সহায়তা না পাওয়ার কারণে এ সকল কৃষক চারা উৎপাদনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। সম্প্রতি হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজারে ধানের চারা বিক্রি করতে আসা বেশ ক'জন কৃষকের সাথে কথা হলে তারা এ বিষয়টি চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান।


বাকিলা ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের কৃষক কুতুবউদ্দিন জানান, বিআর ২৯ ধানের ২ কেজি বীজ ধানের প্যাকেট কিনেছেন সাড়ে ৪শ' টাকায়। সেই ধান বীজতলায় রোপণ শেষে প্রায় দেড় মাস পরিচর্যা করেছেন। সেই চারা বীজতলা থেকে উঠাতে খরচ পড়েছে ৯শ' টাকা। বাজারে আনার রিকশা ভাড়া আর বাজারের খাজনা মিলিয়ে খরচ পড়েছে ১৫শ' টাকা। নিজের শ্রম-ঘামের হিসেবে আনলে মোট খরচ দাঁড়ায় কমপক্ষে ২ হাজার টাকায়। ঠিক সেই বীজ ধানের চারা (হালি বা জালা) বাজারে ক্রেতারা দাম বলছে ৬শ' টাকা।

একই ইউনিয়নের গোগরা গ্রামের আক্তার হোসেন ১০টি চটের বস্তায় করে চারা নিয়ে এসেছেন বিক্রির জন্যে। এ ১০ বস্তা ধানের চারা উৎপাদন করতে তার নিজের শ্রম-ঘাম বাদ দিয়ে খরচ পড়েছে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। আক্তারের টার্গেট ছিলো হাজার পাঁচেক টাকা বিক্রি করবেন। কিন্তু ক্রেতারা এ ১০ বস্তা ধানের চারার মূল্য বলছে ১৭শ' ৫০ টাকা।

পাশের কামরাঙ্গা গ্রামের বিল্লাল হোসেন ২ কেজি বীজ ধানের প্যাকেট কিনেছেন ২শ' টাকায়। সেই বীজ ধানের দেড় মাস পরিচর্যা শেষে চারা উঠানোর খরচ পড়েছে ৮শ' টাকা। নিজের শ্রম-ঘাম বাদ দেয়ার পরেও সেই বীজ ধানের স্তূপকে বাজারে মাত্র ৬শ' টাকা বলেছে ক্রেতারা।

একইভাবে মনের খেদোক্তি প্রকাশ করেন উচ্চঙ্গা গ্রামের আঃ মান্নান। তিনি বলেন, না বেচতে পারলে খালে ফেলে দিবো, এছাড়া আর কিছুই করার নেই। তবে কানে ধরছি ভবিষ্যতে আর বীজ ধান দিয়ে চারার ব্যবসা করবো না।

হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়নমণি সূত্রধর চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, রবি মৌসুমে আমরা ভুট্টা আর সরিষায় প্রণোদনা পেয়েছি। যা মাঠপর্যায়ের কৃষকদেরকে দেয়া হয়েছে। তবে ধানের চারা উৎপাদনকারী কৃষকদের জন্যে সরকারের পক্ষ থেকে আপাতত সহায়তা নেই।

সর্বাধিক পঠিত