• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ইলিশের আমদানিতে সরগরম চাঁদপুরের মৎস্য আড়ত

প্রকাশ:  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৭:৫৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ইলিশের ভর মৌসুম হলেও অসময়ে ইলিশের আমদানি শুরু হয়েছে চাঁদপুরের প্রধান মৎস্য আড়ত বড় স্টেশন মাছঘাট। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০মণ বড় সাইজের ইলিশ আমদানি হচ্ছে এখানে। এছাড়াও স্থানীয় পদ্ম-মেঘনা নদীতে জেলেদের আহরিত ছোট সাইজের ইলিশ নিয়মিত ঘাটে বিক্রি হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহে দক্ষিণাঞ্চলের বড় সাইজের ইলিশের আমদানি হওয়ার কারণে সরগরম হয়ে উঠে মাছঘাট। চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে পাইকারী, আড়তদার, খুচরা বিক্রেতা ও শ্রমিকদের মধ্যে। গত ১০-১২ বছরের মধ্যে মৌসুমের এই সময়ে বড় সাইজের ইলিশ আমদানি দেখেননি বলে জানিয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে বড় দু’টি ট্রলারে করে দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, দৌলতখাঁ, চরফ্যাশন, শ্যামরাজ থেকে বড় সাইজের ইলিশ নিয়ে এসেছে ১০-১২ জন ব্যবসায়ী। এসব ইলিশ টুকরিতে করে আড়তে উঠাচ্ছে শ্রমিকরা। বিক্রির জন্য আড়তগুলোর সামনে বড় বড় স্তূপ করে সাজানো হচ্ছে। বাছাই করা বড়-ছোট ইলিশের স্তূপ আবার মুহূর্তেই হাঁকডাক দিয়ে দাম হাঁকিয়ে বিক্রি করছেন আড়তদাররা।
ঘাটের ভাই ভাই মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ বেপারী বলেন, গত দুই সপ্তাহে যেসব ইলিশ আমদানি হচ্ছে এসব ইলিশের অধিকাংশের সাইজ ১ কেজি। আজকের বাজারে ১ কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি মণ ৩০-৩২ হাজার টাকা, ১ কেজি ৪শ’ গ্রাম এবং দেড় কেজি সাইজের ইলিশ প্রতিমণ ৩৬-৪০ হাজার টাকা, ৫শ’ থেকে ৬শ’ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ ২৪-২৫ হাজার টাকা, ২শ’ থেকে ৩শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ১০-১২ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। ছোট সাইজের ইলিশগুলো বেশিরভাগ চাঁদপুরের স্থানীয় জেলেরা পদ্ম-মেঘনা নদী থেকে আহরণ করে। এর মধ্যে জাটকা ইলিশ থাকে।
মাছঘাটের শ্রমিক মোঃ আমিনুর শেখ বলেন, দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইলিশের ট্রলার রাত ১১টা থেকে সকাল পর্যন্ত আসতে থাকে। রাতে ইলিশ আড়তে নামালেও বিক্রি শুরু হয় সকাল ১০-১১টার পরে। গত ৩ মাস অবসর সময় কাটালেও এখন শ্রমিকরা মাছ উঠানো, প্যাকিং করা, বরফ দেয়া এবং রপ্তানী করা গাড়িতে উঠানোর কাজে ব্যস্ত।
ভোলা জেলার চরফ্যাশন খাজুরগাইছ্যা এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মোঃ আব্বাস বলেন, বুধবার বিকেল ৫টায় তাদের নিজস্ব মাছের আড়ত থেকে বেশি মূল্যে বিক্রির জন্য লঞ্চযোগে ১০মণ ইলিশ নিয়ে এসেছেন। তার সাথে এসেছেন আরো ১০-১২জন ব্যবসায়ী। এই আড়তে বিক্রি করে আবার নিজ এলাকায় ফিরবেন।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক হাজী শবেবরাত সরকার বলেন, গত দুই সপ্তাহে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশের আমদানি বেড়েছে। তবে অসময়ের এই ইলিশে মৌসুমে আহরণকৃত ইলিশের মত স্বাদ নেই। সাধারণত এই সময় বড় সাইজের ইলিশ দেখা যায় না। গত প্রায় ১০ বছর পূর্বে একবার এই সময়ে ইলিশের আমদানি হয়েছিল। প্রাকৃতিকভাবে বড় সাইজের ইলিশ এ সময়ে আমদানি হয় না। ধারণা করা হচ্ছে, সাগরের মধ্যে অনেক সময় ভূকম্পন হয়। যে কারণে ইলিশ উজানের দিকে উঠে আসে।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর বড় সাইজের ইলিশের আমদানি কম। এই ঘাটের ৬-৭জন ব্যবসায়ী দক্ষিঞ্চালের ইলিশ আমদানি করেন। এসব ইলিশ চাঁদপুরের স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয়। এছাড়াও কুমিল্লা, ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, পাবনা, ময়মনসিংহ ও সিলেটে রপ্তানি করা হয়।