• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল ব্যাহত ॥ হরিণায় ট্রাকের দীর্ঘ সারি

প্রকাশ:  ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ১২:১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

টানা চারদিন ধরেই ঘন কুয়াশায় চাঁদপুর-শরিয়তপুর রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে রাতে বন্ধ থাকছে ফেরি। এতে ঘাট এলাকায় সৃষ্টি হচ্ছে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। ফেরিতে পারাপার হতে তিন থেকে চারদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে যানবাহনগুলোকে।
ঘাট এলাকায় যানজট এড়াতে এবং যাত্রীদের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসগুলোকে। এ কারণে চাঁদপুরের হরিণা ও শরিয়তপুর নরসিংহপুরে অর্থাৎ ফেরির উভয় ঘাটে আটকা পড়েছে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক।
গতকাল বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে হরিণা ফেরিঘাটের অদূরে চাঁদপুর-চান্দ্রা-ফরিদগঞ্জ সড়কের ওপর প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আটকা পড়া পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘলাইন দেখা যায়। রাস্তার একপাশ দিয়ে যানবাহন চলতে গিয়ে সেখানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে হরিণা ফেরিঘাটের স্কেলের কাছ থেকে চান্দ্রার খাশের বাড়ি পর্যন্ত যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। দিনের পর দিন আটকা পড়ে থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ট্রাকের চালক ও সহযোগীরা।
গতকাল ১৫ জানুয়ারি বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ফেরি রূটের মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে কুসুমকলি, কাকলী, কুমারী, করবী ও কামিনী নামের ফেরিগুলো অবস্থান নিয়েছে। দুপুর সোয়া ২টায় দুটি ফেরি চলাচল শুরু হয়। ফেরির চাঁদপুর অংশে হরিণা ঘাটে আটকা পড়েছে ৪ শতাধিক যানবাহন। যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ছাড়াও লাশবাহী গাড়িও আটকা পড়ে। চট্টগ্রাম থেকে ভ্রমণে আসা বাসযাত্রী শরীয়তপুরের যাত্রী কানু রায় বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে রাত ১০টার পরে ফেরি বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ২০টি যাত্রীবাহী বাসের যাত্রী শীতের মধ্যে ঘাটেই রাত কাটিয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা খুলনাগামী কাভার্ড ভ্যান চালক মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাতে চাঁদপুর হরিণাঘাটে এসেছি। কুয়াশার কারণে শনিবার থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত থেমে থেমে ফেরি চলছে। আরো ক’দিন থাকতে হয় বলতে পারছি না।
লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভোর রাত ৪টায় ঘাটে এসেছি। যে পরিমাণ গ্যাস আছে রাত ১২টা পর্যন্ত লাশ নিয়ে অপেক্ষা করা যাবে। এরপরে সমস্যার সৃষ্টি হবে।
চট্টগ্রাম-খুলনার মধ্যে চলাচলকারী দিদার পরিবহনের চালক মাসুদ হোসেন বলেন, আমাদের কষ্ট হলে সমস্যা নেই। কিন্তু দীর্ঘ পথ জার্নি করে আসা যাত্রীদের নিয়ে সমস্যা বেশি। কারণ এই ঘাটে থাকা কিংবা খাওয়ার কোনো ভালো ব্যবস্থা নেই।
বিআইডাব্লিউটিসি চাঁদপুর কার্যালয়ের ম্যানেজার (বাণিজ্য) ফয়সাল চৌধুরী বলেন, ঘনকুয়াশার কারণে গত ক’দিন ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তবে কুয়াশা অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে মঙ্গলবার রাত ১০টার পরে সব ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। দুই পাড়ে প্রায় ৬শ’ গাড়ি আটকা পড়েছে। কুয়াশা কেটে যাওয়ার কারণে দুপুর সোয়া ২টায় ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। কুয়াশার কারণে সমস্যার সৃষ্টি না হলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে যানবাহন পারাপার স্বাভাবিক হবে।
অপরদিকে ঘনকুয়াশার কারণে চাঁদপুর-ঢাকা নৌরূটে যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো সিডিউল ঠিক রাখতে পারছে না। এই রূটের ১৭টি লঞ্চের মধ্যে অধিকাংশ লঞ্চ সঠিক সময়ে চাঁদপুর ঘাট ত্যাগ করলেও নদীতে গিয়ে আটকা পড়ে গন্তব্যে পৌঁছতে বিলম্ব হচ্ছে। সকাল ১০টায় লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা এমভি মানিক, এমভি আওলাদ ও এমভি আঁচল নামের লঞ্চগুলো চাঁদপুর ঘাটে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে।