৫২ সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৫২ অর্জন
কর্মকৌশল ও নীতি প্রণয়নসহ গত এক বছরে অর্ধশতাধিক ক্ষেত্রে সাফল্যের দাবি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়েরের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, ৫২ সপ্তাহে ৫২টি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন করেছে মন্ত্রণালয়। গত বছরের ৭ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। আগামী ৭ জানুয়ারি তাদের এক বছর পূর্ণ হবে। এই সময়ে মন্ত্রণালয়ের অর্জন খুঁজে দেখা গেছে, ৫২টি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর বড় অংশ বাস্তবায়নও হয়েছে।
এর আগে এক বছরে মন্ত্রণালয়ের অর্জন কী, তা জানাতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ১৬ সদস্যের কমিটি গঠন করে। তবে এ কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অর্জন তুলে ধরা হলো।
এক নজরে অর্জন
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একযোগে ২ হাজার ৭৩০টি নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি, ১৯৫ দেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালনে ইউনেসকোর সম্মতি আদায়, পাবলিক, বিশেষায়িত ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৬৪০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষার উদ্যোগ, ২০২১ সাল থেকে মাধ্যমিকের সব ক্লাসে কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, পাঠ্যক্রম পরিমার্জনের কাজ শুরু, গ্রেডিং সিস্টেম সমন্বয় শুরু, কোচিং-বাণিজ্য বন্ধে বিধিমালা এবং প্রশ্নফাঁস ও গুজব প্রতিরোধ করা হয়েছে।
এছাড়া, ১৩ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন ভবনের কাজ শুরু, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরে ২ হাজার ৪৯৪ জন জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা, বঙ্গবন্ধু এভিয়েশন ও অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়, হবিগঞ্জ ও চাঁদপুরে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড আইন ও শিক্ষা বোর্ড আইন প্রণয়ন এবং শিক্ষা আইন চূড়ান্ত করা হয়েছে।
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালু, অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠন, র্যাগিং প্রতিরোধে অ্যান্টি-বুলিং বিধিমালা, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কর্নার’, ধারাবাহিক মূল্যায়নে পাইলটিং, মাধ্যমিক পর্যায়ে তিনটি বিষয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতির কাজ শুরু, ২০ শতাংশ নম্বর ধারাবাহিক মূল্যায়ন চালু করা।
ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে ডায়েরি দেওয়ার প্রচলন, শিক্ষা ক্যাডারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্রেডে ১০৩টি পদ আপগ্রেড, দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্রেডের আরও ৩৩৫ পদ সৃষ্টি, অভিন্ন প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পদ সৃষ্টির কাজও চূড়ান্ত করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগে জটিলতা নিরসন করে ৭০২ জনকে নিয়োগ, সব সরকারি কলেজকে ই-ফাইলিংয়ের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মনিটরিং ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো, আকস্মিক পরিদর্শন ব্যবস্থা চালু, ২০ হাজার স্কুলে বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম সরবরাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের সমস্যা নিরসন এবং উচ্চশিক্ষা অঙ্গনে অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসার বেতন কাঠামোর নীতিমালা চূড়ান্ত, স্কুল ও কলেজ শিক্ষক আত্তীকরণ বিধিমালা, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ বিধিমালা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য অটিজম একাডেমি স্থাপনে জটিলতা নিরসন, বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজ করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি ও পাঠদানের অনুমতি শুরু করা হয়।
কওমি মাদ্রাসার পাঠ্যসূচিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ানোর উদ্যোগ, শিক্ষার্থীদের আমিষের ঘাটতি মেটাতে পরিপত্র জারি, ৬ হাজার স্কুলে মিড-ডে মিল চালু, পর্যায়ক্রমে সব স্কুলে মিড-ডে মিল চালুর উদ্যোগ, বন্ধ থাকা শিক্ষাবৃত্তি চালু, মাঠ পর্যায়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বাস্থ্য-পুষ্টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ, প্রতিটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য মনিটরিং, প্রত্যেক স্কুলে ওজন ও উচ্চতা মাপার ব্যবস্থা করা, রি-প্রোডাকটিভ হেলথ ও জেন্ডার ইকুইটি বিষয়ে কার্যক্রম চালু, পারিবারিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিতে কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর খাদ্যতালিকা অভিভাবকদের হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কো-এডুকেশন চালু, ছাত্রছাত্রীদের জন্য আলাদা ওয়াশ ব্লক তৈরি, শরীরচর্চা করার সুযোগ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানো’ শীর্ষক প্রজেক্ট সফল করা, শিক্ষার্থীদের ৭টি সফট স্কিলস-এ দক্ষ করে তোলার উদ্যোগ, প্রতি বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের দিয়ে শিক্ষাঙ্গন পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি, শতবর্ষী ১৩টি কলেজকে ‘সেন্টার অব এক্সেলেন্স’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়ালঘেঁষে পান-সিগারেটের দোকান না রাখার উদ্যোগ এবং সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।