আজ চাঁদপুর মুক্ত দিবস
মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলায় ব্যাপক আয়োজন


আজ ঐতিহাসিক ৮ ডিসেম্বর। স্বাধীন সোনার বাংলার ইতিহাসে আজকের দিনটি চাঁদপুরের জন্যে একটি ঐতিহাসিক এবং গৌরবোজ্জ্বল দিন। ১৯৭১ সালের এদিনে চাঁদপুর হানাদার মুক্ত হয়। এদিন চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্বাধীন সোনার বাংলার লাল সবুজের পতাকা পত্ পত্ করে উড়তে থাকে। আর চাঁদপুরবাসী বিজয় উল্লাস করে। প্রতি বছর এ দিনটি স্মরণে চাঁদপুরে ব্যাপক কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে। গত ক’বছর চাঁদপুর মুক্ত দিবসের সকল কর্মসূচি মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলাকে ঘিরেই হয়ে থাকে। এবারো বিজয় মেলায়ই হবে চাঁদপুর মুক্ত দিবসের সকল কর্মসূচি।
কর্মসূচি হচ্ছে : আজ সন্ধ্যায় (বাদ মাগরিব) বিজয় মেলা মঞ্চে একশটি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, এরপর ৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে যেসব মুক্তিযোদ্ধা চাঁদপুরে বীরের বেশে ঢুকেছে, তাদের মধ্য থেকে মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখবেন। মুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। আলোচনা পর্ব শেষে স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করবেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের তত্ত্বাবধানে শিল্পীরা। চাঁদপুর মুক্ত দিবসকে ঘিরে এসব কর্মসূচির কথা জানালেন। বিজয়মেলার চেয়ারম্যান অ্যাডঃ বদিউজ্জামান কিরণ ও মহাসচিব হারুন-আল-রশীদ।
দীর্ঘ ৮ মাস পাক হানাদার বাহিনীর সাথে বাঙালি মুক্তি সেনারা যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুরকে শত্রু মুক্ত করেন। এর আগে ৬ ডিসেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত হাজীগঞ্জের বলাখাল এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তি বাহিনীর দীর্ঘ সম্মুখ যুদ্ধ হয়। সে যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী পরাজয় বরণ করে পিছু হটতে বাধ্য হয়। তারা চাঁদপুরের উপর দিয়ে নদী পথে পালিয়ে যায়। পলায়নরত অবস্থায় পাকিস্তানী সেনা বাহিনীর মেজর জেনারেল আব্দুর রহিম মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে আহত হন। পরে মাঝ নদী থেকে হেলিকপ্টারযোগে পাকিস্তানি সৈন্যরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর রাতে পাক হানাদার বাহিনী চাঁদপুর থেকে পালিয়ে যায়। ৮ ডিসেম্বর সকালে মিত্র বাহিনীর ট্যাঙ্কার লেঃ কর্নেল সুট্টির নেতৃত্বে চাঁদপুর প্রবেশ করে। ৮ ডিসেম্বর প্রথমে চাঁদপুরের তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে এবং পরে চাঁদপুর সদর থানা প্রাঙ্গণে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এভাবেই ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর শত্রু মুক্ত হয়ে এ দিন চাঁদপুর মুক্ত দিবস হিসেবে ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হয়ে আছে।