রাজরাজেশ্বরে নৌ পুলিশ-জেলে সংঘর্ষে আহত ৬ ॥ রাবার বুলেট নিক্ষেপ, আটক ২৮

মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়ার লক্ষ্যে চাঁদপুরের অভয়াশ্রম এলাকায় নৌ-পুলিশের অভিযানকালে জেলেদের সাথে সংঘর্ষে ২ জেলে, ২ পুলিশ সদস্য ও স্পীডবোট চালকসহ ৬ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৮ জেলেকে আটক করে। পৃথক আরো দুটি অভিযানে আটক হয়েছে ১০ জেলে। গতকাল দুপুরে আটক জেলেদের পুলিশ আদালতে পাঠালে আদালত তাদের জামিন না-মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
১৪ অক্টোবর সোমবার ভোরে চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ^র ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পাড়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সে সময় সেখানে নৌ-পুলিশের এসপি জমশের আলীর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়।
চাঁদপুর নৌ-থানা পুুলিশ জানায়, সোমবার ভোর ৪টার দিকে নৌ-পুলিশ মেঘনায় অভিযান শুরু করে। ভোর ৬টার দিকে মা ইলিশ নিধনকালে জেলেদের আটক করতে গেলে তারা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং দলবদ্ধ হয়ে পুলিশের উপর বাঁশ নিয়ে আক্রমণ চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। আহত জেলেরা হলো : নাজমুল হোসেন শেখ (২০), মনির হোসেন শেখ (৩৫) ও স্পীডবোট চালক মোঃ রুবেল (২০)। আর আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন এসআই জাকির হোসেন, নায়েক দেলোয়ার হোসেন ও কনস্টেবল শাহরিয়ার। অভিযানের সময় পুলিশ ২১ কেজি মা ইলিশ ও ৫০ হাজার মিটার কারেন্টজাল জব্দ করে।
আটক জেলেরা হলো : কামাল (৩২), সবুজ (২৪), শামছু (২৮), মিলন বেপারী (৪০), আমির হোসেন (২৫), কাউছার বেপারী (২৫), বিজয় বেপারী (২০), রুহুল আমিন (২০), হাবিব খান (৩২), ইব্রাহীম (১৮), চারু গাজী (৪০), ছাত্তার খান (২১), আইনুল হক (৬০), আল-আমিন বেপারী (১৮), জসিম বেপারী (২০), নাজমুল হোসেন শেখ (২০), মনির হোসেন শেখ (৩৫) ও অজ্ঞাতনামা একজন শিশু।
চাঁদপুর নৌ-থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবু তাহের খান জানান, আটক জেলেদের বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে ১জন শিশু থাকায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। ৩ পুলিশ সদস্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত অবস্থায় আটক দুই জেলে ও স্পীডবোট চালক চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অপরদিকে গতকাল সকালে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশনের পেটি অফিসার মাইনুল হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে মেঘনা নদী থেকে ৮ জেলেকে আটক করা হয়। আটকরা হলো : নেয়ামত মিজি (১৯), শহীদ গাজী (২৫), মোঃ আরিফ গাজী (১৮), ফয়েজ পাটওয়ারী (২০), মোঃ রাজিব (২২), মোঃ শাকিল (১৯), মোঃ আকতার হোসেন (১৮) ও মোঃ শাহরুখ হোসেন (২০)। এ সময় জেলেদের কাছ থেকে ৫০ কেজি মা ইলিশ ও ৩ হাজার মিটার কারেন্টজাল জব্দ করে কোস্টগার্ড।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিদুজ্জামান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৮ জেলের প্রত্যেককে ১ বছর করে কারাদ- প্রদান করেন।
এদিকে হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্স রোববার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে মা ইলিশ শিকার করায় দুই জেলেকে আটক করে। আটকরা হলো : মনির হোসেন গাজী (৩৫) ও আমির হোসেন গাজী (২৭)। হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌসি বেগম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রত্যেককে ১ বছর করে কারাদ- প্রদান করেন।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুল বাকি জানান, চাঁদপুরের ৯০ কিলোমিটার নৌ-সীমানায় জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের দিন ও রাতে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কারাদ-প্রাপ্ত জেলেদের পুলিশ কারাগারে প্রেরণ করেছে।