ঢাকার ক্যাসিনোর জুয়ার প্রভাব চাঁদপুরে
আওয়ামী লীগ নেতাসহ আটক ৯ জুয়াড়ি


চাঁদপুরে ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত কøাব গুলোতে ক্যাসিনোর জুয়া খেলা ও অভিযান চালিয়ে আটক,মাদক,নগদ টাকা,জুয়ার সরঞ্জাম,মদের বোতল, ক্যাসিনো খেলার বোর্ড উদ্বার করেছে। যা বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার প্রভাব চাঁদপুরে পড়েছে। এতে করে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি) চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন অভিজাত ক্লাব ও বিভিন্ন স্পোটিং ক্লাব ও শহরতলীর কøাব গুলোতে ২দিন যাবত অভিযান চালিয়েছে। এ অভিযান কালে বিভিন্ন প্রকার জুয়া খেলা ও ক্যাসিনো নামক জুয়া চালিয়ে থাকলে সে জুয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেছেন। গত শুক্রবার ও শনিবার এ ২দিন মডেল থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথ ভাবে রাত ১১টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে এ সব জুয়া খেলার সাথে রয়েছে, প্রভাবশালী ও তেমনি বিত্তবানরা। যার ফলে ক্লাবের নামে মাদক, জুয়া আর নারীদের নিয়ে চলে প্রমোদ আসর। তা আবার দেখার কেউ নেই। যদিও সংশ্লিষ্টদের দাবি প্রশাসন আর কথিত গণমাধ্যমকর্মীদের মাসিক মাসোয়ারা দিয়েই এসব অপকম করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার অভিযান কালে শহরতলীর বাবুর হাট একাদশ ক্লাবে থেকে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শহরতলীর বাবুরহাট একাদশ ক্লাবে অভিযান চালিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাসহ ৯ জুয়াড়িকে আটক করেছে পুুলিশ। শনিবার মধ্যরাতে বাবুরহাট একাদশ ক্লাবে জুয়া খেলা অবস্থায় তাদের আটক করে পুলিশ
এদিকে চাঁদপুরের নয়া পুলিশ সুপারের সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে গত শুক্র ও শনিবার রাতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সোনালী অতীত ক্লাব, ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাব, নতুন বাজার ক্রীড়া চক্র ও আবাহনী ক্রিয়া চক্র,মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব, পূর্ব শ্রীরামদী,বাবুর হাট একাদশ ক্লাবসহ শহরের বেশ কয়েকটি ক্লাবে পুলিশি অভিযান ও তল্লাশি চালানো হয়েছে। যদিও কোন মাদক উদ্ধার হয়নি। তবুও সতর্ক বার্তা হিসেবে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে ক্লাবগুলোর চিহ্নিত পৃষ্ঠপোষকদের কেউ কেউ ইতোমধ্যে গাডাকা দিয়েছেন বলে ক্লাব গুলোর কেয়ার টেকার ও চা-চক্রে নিয়োজিত ব্যাক্তিরা জানান অভিযোগ করে জানান। অপরদিকে শহরবাসীর দাবি, এসব ক্লাবের অন্তরালে শহরের অভ্যন্তরে দেশীয় অস্ত্রবাহিনী গড়ে উঠছে। আর সেজন্য মাঝে-মাঝে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেখতে হয় তাদের। এতে করে সাধারণ মানুষ প্রায়ই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। তবে অস্ত্রের মহড়াধারীরা ২/১ বছর অনেকটাই নিস্ক্রিয়। আর এসব ক্লাবগুলোতে মাসোয়ারা দিতে হয় বেশ কিছু ব্যবসায়ী ও কিছু প্রবাসী ব্যক্তিদের। ফলে এদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচেছনা।
এ অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন,চাঁদপুর মডেল থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন মো আব্দুর রবসহ ডিবির কর্মকর্তারা।
বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বেশ কয়েকটি ক্যাসিনোতে র্যাবের অভিযানে অসামাজিক কার্যকলাপ, মাদক কারবার, জুয়ার আসরসহ টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া টনক নড়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে অভিযানে আটক হয়েছে যুবলীগের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা। তাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আটকদের পেছনে কারা আছে তাদেরও চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলছে বলে দেশের শীর্ষ গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।
তারই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুরেও এমন দাবি সর্বমহলের। এখন দেখার বিষয় জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা শেষ পর্যন্ত কি করেন।
পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতা, কথিত সুশীলদেরও আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি শহরবাসীর। তারা নয়া পুলিশ সুপারের কাছে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন।
এ অভিযানে সারা দেশের মানুষ ও রাজধানীবাসী খুশি হয়েছে। তারা এই অভিযানকে সরকারের একটি সাহসী পদক্ষেপ হিসেবেই চিহ্নিত করছে। ফলে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে পেছনে যারা রয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি বেশ জোড়ালো হয়েছে। সর্বসাধারণ বলছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এইসব অপরাধ জগৎ ধ্বংস করে দিতে হবে, একটি সুন্দর আগামির বাংলাদেশের জন্য।
বাবুরহাট একাদশ ক্লাবে অভিযানে জুয়াড়িরা হলো- চাঁদপুর কমিউনিটি পুলিশিং অঞ্চল ১৩ এর সাধারণ সম্পাদক ও চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সুকমার কর রামু (৫৫), চাঁদপুর পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি যুবরাজ চন্দ্র দাস (৫০), সদরের আশিকাটি ইউনিয়নের মো. আব্দুল মান্নান মাল (৫৪), দক্ষিণ দাসদী গ্রামের ছিদ্দিক মিজি (৫০), শিলন্দিয়া এলাকার ইমদাদুল হক পাটওয়ারী (৫৫), একই এলাকার সেলিম মিজি (৬০), দক্ষিন দাসদী গ্রামের ইসমাইল শেখ (৫০), দাসদী গ্রামের দুলাল ধর (৫৬) ও হোসেনপুর গ্রামের বশির সৈয়াল (৬৫)।
ঘটনাটি নিশ্চত করেছেন, চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. নাসিম উদ্দিন। আটক জুয়াড়িদেরকে পুলিশ রবিবার দুপুরে আদালতে পাঠালে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দ্দেশ দেন। চাঁদপুরের ক্লাবগুলোতে অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।