বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে 'ইন্ডিয়ান ওশ্যান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) ব্লু ইকোনমি বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুনীল অর্থনীতির (ব্লু ইকোনমি) সর্বোচ্চ সুফল পেতে অংশীজনদের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই। আপনাদের প্রতি আহ্বান- এ সম্মেলনেই যেন আমরা সম্মিলিতভাবে সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৪ অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে পারি।
“সুনীল অর্থনীতির বিকাশ ও উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে এবং সকলের কল্যাণ নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করব। আর তবেই ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৯ বিলিয়ন মানুষের জীবনধারণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এই সুনীল অর্থনীতিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, সুনীল অর্থনীতিকে সামনে রেখে সমুদ্রে অব্যবহৃত ও এর তলদেশে অ-উন্মোচিত সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে এই অঞ্চলে যার যার টেকসই উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করার সুযোগ রয়েছে।
“সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার করে আমরা দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তাসহ বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারি। আমি অত্যন্ত আশাবাদী যে আপনারা এখানে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে একজোট হয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ করবেন, যাতে এ অঞ্চলে একটি অভিন্ন টেকসই সুনীল অর্থনৈতিক বেষ্টনী গড়ে উঠে।”
সমুদ্রকে কেন্দ্র করে সংগঠিত সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সাগর ও মহাসাগর হল মানবজাতির অবারিত সম্পদ ও অপার সম্ভাবনার উৎস যার অনেকাংশই এখনও অনাবিষ্কৃত অবস্থায় রয়েছে। বৈশ্বিক বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ ও তেল পরিবহণের ৬০ শতাংশ এই সাগর-মহাসাগর দিয়েই হচ্ছে। বিগত ১৫ বছরে সমুদ্র বাণিজ্যের পরিমাণ ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
“অপ্রিয় হলেও সত্যি যে মনুষ্য-সৃষ্ট নানা কারণে আমাদের সাগর আজ ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন। সমুদ্র বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হলে মানবজাতির অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়বে। অতিসত্বর সকলে মিলে এই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।”
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে গিয়ে যেন সমুদ্রের সুস্থ পরিবেশ বিঘ্নিত না হয় সেদিকেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।
বঙ্গোপসাগরে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, আহরণ, ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের জন্য সরকার স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ-মেয়াদি কর্মপন্থা প্রণয়ন করেছে বলেও জানান তিনি।
আগামী ১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী দুবছরের জন্য আইওআরএর সহ-সভাপতি এবং তারপরের দুবছর বাংলাদেশের সভাপতির দায়িত্ব পালনের সময় সবার সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) খোরশেদ আলম, আইওআরএ চেয়ার মাখস্ত মেগেদেল সোতে ও মহাসচিব ড. নমভো এন নোকে এসময় উপস্থিত ছিলেন।