ধর্মের বিভিন্নতা ঐক্যের বাধা নয় : শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, হাজার বছরের বিদ্যমান বাঙালি সংস্কৃতির এক অনন্য শক্তি হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। এই ভূমিতে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-খ্রিস্টান সবাই নিজেদের সৌভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে গেছে বাঙালী জাতীয়তাবাদকে। আমাদের বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, মহান ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি পদক্ষেপে বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার মুসলিম-বাংলার খ্রিস্টান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বীর বিক্রমে লড়াই করে গেছে। ধর্মের বিভিন্নতা এখানে তাই ঐক্যের বাধা নয় বরং একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনের অনিবার্য উপাদান হয়ে উঠেছে। তিনি ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার শ্রীশ্রী যশোমাধবের রথযাত্রার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জীবন কানাই দাসের সভাপ্রধানে আরো উপস্থিত ছিলেন এরোমা দত্ত এমপি, স্থানীয় এমপি বেনজির আহমেদ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) ড. অরুণা বিশ^াস।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা স্বাধীনতার মাত্র এক বছরের মাথায় জনগণকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান উপহার দেন। ধর্মনিরপেক্ষতা এই সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি। তিনি সকল ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। ধর্মের কারণে কোনো নাগরিক যাতে বৈষম্যের শিকার না হয় তা নিশ্চিত করেন। সকলে যাতে নিজ নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে পারে তা নিশ্চিত করেন। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। জাতির পিতা ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নামে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করেছিলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, ধামরাইয়ের রথ অত্যন্ত প্রাচীন এবং উপমহাদেশে এই রথের খ্যাতি রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী বড় রথটি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা পুড়িয়ে দেয়। পুড়িয়ে দেয়া হলেও এর উৎসব-আয়োজন থেকে মানুষকে বিরত রাখা যায়নি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা-বিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রেতাত্মারা আজও সক্রিয় আছে। তারা এখনও নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। বাংলাদেশকে জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করছে। এই অপশক্তি বাঙালি জাতির কাছে একাত্তরে পরাজিত হয়েছে। এখনও হবে।
এই স্বাধীনতা-বিরোধী শক্তির মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে গোটা বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করতে হবে। জঙ্গি-সন্ত্রাসীদেরকে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। এসব জঞ্জালকে চিরবিদায় জানিয়ে দেশের আর্থ-সামজিক অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হবে।