• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুরে বিভিন্ন পণ্যের নকল কারখানা সিলগালা ॥ মালিককে ২ লাখ টাকার অর্থদ-সহ এক মাসের কারাদন্ড

প্রকাশ:  ২৬ মে ২০১৯, ১১:০৪ | আপডেট : ২৬ মে ২০১৯, ১১:০৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুরে জেলা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে শহরের ওয়্যারলেস্ এলাকা থেকে নকল ডিটারজেন্ট পাউডার, ট্যাং, চাটনী (আচার) ও সরিষার তৈল তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে। পরে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সেখানে ৪টি নকল পণ্য উৎপাদনকারী কারখানায় থাকা বিপুল পরিমাণ ভেজাল পণ্য জব্দ করা হয়। এ সময় কারখানার পরিচালক তানভীর আহমেদকে আটক করা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পরিচালক তানভীরকে ২ লাখ টাকা অর্থদ- এবং ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিপুল পরিমাণ পণ্যসহ নকল কারখানাটি সিলগালা করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্ততি চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
চাঁদপুর পৌর ১৩নং ওয়ার্ডের ওয়্যারলেস বাজারের মৃধা বাড়ি এলাকায় তুরাগ নামে একটি কারখানায় জেলা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালায়। গতকাল শনিবার বিকেলে জেলা পুলিশের এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাঁদপুর সদর সার্কেল) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী। তিনি জানান, ওয়্যারলেস মৃধা বাড়ি এলাকায় প্রায় ৪/৫ বছর ধরে চলছিলো তুরাগ নামে ১টি অবৈধ কারখানা। যেখানে অবৈধ উপায় অবলম্বন করে আম ও  তেঁতুলের চাটনী, ২ গুণ সাদা তুরাগ উইন পাওয়ার হোয়াইট (ডিটারজেন্ট), তুরাগ ট্যাং ও তুরাগ খাঁটি সরিষার তেলের মতো ৪টি পণ্য তৈরি করা হচ্ছিলো। গোপন সূত্রে এমন সংবাদ জানতে পেরে আমরা জেলা পুলিশ এখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করি এবং ঘটনার সত্যতা পাই। পরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেকে খবর দিলে তারা এসে পরবর্তী আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এ দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কজন জানান, এই তুরাগ কারখানাটি জায়গার মালিক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এখানে এ নকল কারখানাটি খুলতে দেয়। এখান থেকে জায়গার ভাড়া ছাড়াও মোটা অংকের মাসোহারা নিতেন জায়গার মালিক পক্ষ। শুধু তাই নয়, স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটও এই জায়গার মালিকের সাথে এক হয়ে এ কারখানা থেকে মোটা অংকের মাসোহারা পেয়ে থাকতো। এ বিষয়ে জায়গার মালিক পক্ষের আত্মীয় নাসির জানান, এ জায়গাটি আমার ভগ্নিপতির। তিনি এসব বিষয়ে জানেন না। তবে কে জানে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান। কারখানার মালিক পক্ষের তানভীর জানান, আমার ভাই এখানে ব্যবসা করতো, আমি এর বেশি কিছু জানি না। আমি এখানে মাঝে মধ্যে আসি। তবে এটি যে অবৈধ সেটা আমার জানা ছিলো না।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল ইসলাম জানান, আমরা তুরাগ নামে ওই কারখানাটির সকল পণ্য উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। সে সাথে নানা অনিয়ম থাকায় কারখানাটি সিলগালা করেছি। শাস্তি সম্পর্কে তিনি জানান, আমরা এই কারখানা পরিচালনাকারী তানভীরকে নগদ ২ লাখ টাকা অর্থদ- এবং ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দিয়েছি। আর যারা কারখানায় কাজ করতো ওদেরকে কঠোর সতর্কতা প্রদান করে ছেড়ে দিয়েছি। তবে সচেতনমহল মনে করে শুধু কারখানা কর্তৃপক্ষকেই নয়, জেনে শুনে এসব কারখানা স্থাপন করতে দেয়া জায়গার মালিক কর্তৃপক্ষের প্রতিও কঠোর ব্যবস্থা ও শাস্তি প্রদান করা উচিত। যাতে করে কেউ আর না জেনে শুনে এভাবে যাকে-তাকে কারখানা করতে সুযোগ না দেয়। অভিযান পরিচালনাকালে আরো উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাসিম উদ্দিন, পুরাণবাজার ফাঁড়ির এসআই জাহাঙ্গীর হোসেনসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট সদস্য।

সর্বাধিক পঠিত