ফণীর আঘাতে চার জেলায় পাঁচজনের মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে ঘরচাপা পড়ে চার জেলায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এক জন, বরগুনায় দুই এবং ভোলায় এক ও পটুয়াখালীতে একজন। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরো ৩৪ জন।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় ঘরচাপা পড়ে দাদি ও নাতির মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৩ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়ার খাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন- নুরজাহান বেগম (৬০) কালিয়ার খাল এলাকায় আব্দুল বারেকের স্ত্রী ও তার নাতি জাহিদুল ইসলাম (৮)।
চরদুয়ানি ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহীন মিয়া বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। হয়েছে।
ঘুর্ণিঝড়ে ভোলা সদরের দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এসময় ঘরচাপা পড়ে রানী বেগম (৫০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৪ মে) ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রানী বেগম ওই এলাকার সামসুল হকের স্ত্রী ও দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁধের বাসিন্দা।
ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মো. কামাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চত করেছেন।
অপরদিকে দৌলতখানের মদনপুর এলাকায় ঝড়ে ২০টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সেখানকার বাসিন্দা লুৎফর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা সূর্বণচরের মেঘনা নদীর তীর সংলগ্ন ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে ফণীর অগ্রভাগ থেকে সৃষ্ট প্রবল ঝড় বৃষ্টিসহ আঘাত হানে। এতে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ইউনিয়নে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
ঝড়ে ঘরের মধ্যে চাপা পড়ে চর আমানউল্লাপুর ইউনিয়নে একজন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয়রা।
শনিবার ৪ মে ভোর সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলায় এ ঝড় আঘাত হানে। নিহত ও আহতদের নামপরিচয় এখনো জানা যায়নি।
একজন নিহত হওয়ার বিষয়টি চর আমানউল্লাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গাছচাপায় মো. হাবিব নামে আহত এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
শনিবার (০৪ মে) রাত ৩টার দিকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। মো. হাবিব কুয়াকাটা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের খেজুরা গ্রামের হারুন মুসুলির ছেলে।
এছাড়াও
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে চাঁদপুরে প্রচণ্ড গতির ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হয়েছে। মেঘনা নদীর পূর্বপাড়ে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর না পাওয়া গেলেও নদীর পশ্চিমপাড়ে চরাঞ্চলে বেশ কয়েকটি বসত ঘর ও গাছপালা ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। তবে এ ঘটনার কোনো হাতহতের খবর পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে দিকে সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের শিলারচর, খাসকান্দি, মান্দের বাজার গ্রামে প্রচণ্ড গতির ঝড়ো হাওয়ায় বসতঘরগুলো ভেঙে পড়ে ও গাছপালা তছনছ হয়ে যায়। রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হজরত আলী বেপারি চাঁদপুর পোস্টকে বলেন, শিলারচরসহ কয়েকটি গ্রামে ঘর ভাঙলেও কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কারণ ইউনিয়নের অধিকাংশ বাসিন্দাদেরকে শুক্রবার সন্ধ্যার পূর্বে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।এদিকে চাঁদপুরে শুক্রবার রাত পৌনে ৩টার দিকে প্রচণ্ড গতিতে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়। সকাল ৮টা পর্যন্ত বৃষ্টি না হলেও বাতাসের গতি কমেনি। মেঘনা নদী উত্তাল রয়েছে। শুক্রবার বিকেলে চরাঞ্চলের সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।