ফরিদগঞ্জের সবুজ মিজিকে ভুয়া ভিসায় ওমান নিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ
মোঃ সবুজ মিজি (২৫) নামে ফরিদগঞ্জের এক যুবককে ভুয়া ভিসায় ওমান নিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই অভিযোগ উঠে চাঁদপুর সদরের খালেক গাজীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই যুবককে সেখানে আটকে রেখে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে তার পরিবার। বর্তমানে ওই যুবক ওমানে নিখোঁজ রয়েছে। সবুজ মিজি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৯নং উত্তর গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ধানুয়া উত্তর চাঁদপুর গ্রামের কাদির মুন্সি বাড়ির বিল্লাল হোসেনের পুত্র। অভিযুক্ত খালেক গাজী চাঁদপুর সদরের ৯নং বালিয়া ইউনিয়নের গুলিশা গাজী বাড়ির বাসিন্দা।
সবুজ মিজির মা মাজুদা বেগম জানান, অভিযুক্ত খালেক গাজীর ছেলে বারেকের সাথে সবুজের ছোট ভাই সুমন মিজির বন্ধুত্ব। এই সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করেই ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার চুক্তিতে সবুজকে খালেক গাজী ওমান পাঠান। প্রথমে কথা ছিলো মাত্র ১লাখ টাকা দিলেই সবুজকে ওমান নিয়ে কাজ দিবে। পরবর্তীতে বেতন থেকে পর্যায়ক্রমে বাকি টাকা পরিশোধ করার সুযোগ দিবে। কিন্তু খালেক গাজী তার ছেলে বারেকের মাধ্যমে নানা অজুহাত আর কৌশলে ধীরে ধীরে তাদের কাছ থেকে পুরো টাকা আদায় শেষে সবুজকে ওমান নেয়। এরপর সবুজকে কাজ না দিয়ে সেখানে আটকে রেখে নানা অজুহাতে মুক্তিপণ দাবি করে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা শুরু করে।
মাজুদা বেগম আরও জানান, গত ৭ মার্চ খালেক গাজীর পুত্র বারেক গাজী টাকার জন্যে তাদের বাড়িতে এলে এলাকাবাসী তাকে আটকে ফেলে। বিষয়টি উত্তর গোবিন্দপুর ইউপির চেয়ারম্যানকে অবগত করা হলে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে এক মাসের মধ্যে সবুজের কাজের নিশ্চয়তা দিয়ে বারেক গাজী ৫শ’ টাকার স্ট্যাম্পে সই করে ছাড়া পায়। অথচ এর পরেও ছেলেকে কাজ দেয়া দূরে থাক তারা আর যোগাযোগ করেনি। এদিকে সবুজেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। মাজুদা বেগম জানান, উল্টো খালেক গাজী আমাদের ফোন করে হুমকি দিয়ে বলে, আমার ছেলে নাকি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। মাজুদা বেগম তার ছেলেকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার এবং খালেক গাজীর প্রতারণার বিষয়ে প্রশাসনের কাছে সুবিচার দাবি করেন এবং আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান।
এদিকে এ বিষয়ে খালেক গাজীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে ওমান থেকে তিনি জানান, সবুজের পরিবার চুক্তি অনুযায়ী ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার মধ্যে ২লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছে। আমি তাকে ওমান এনে একটি কোম্পানিতে কাজও দিয়েছি। ব্যাংক কার্ডের মাধ্যমে সে ১ মাসের বেতনও গ্রহণ করেছে। এরপর আমার নিজের এবং কোম্পানির আড়াই হাজার রিয়েল (প্রায় ৫ লক্ষাধিক) টাকা চুরি করে সে পালিয়ে গেছে।
খালেক গাজীর ছেলে বারেক গাজী জানান, চুক্তিমতো আমার বাবা সবুজকে ওমান নিয়ে কাজ দিয়েছে। অথচ তারা পুরো টাকা পরিশোধ করেনি। সবুজের পরিবার টাকা দেয়ার নামে আমাকে তাদের বাড়িতে আটকে রাখে এবং সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়েছে। যার ফলে আমার বাবাও সবুজ ১ লাখ টাকা চুরি করেছে বলে মিথ্যা কথা বলেছেন। বারেক আরও জানায়, সবুজের পরিবার তার বাবাকে সর্বমোট ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছে।