মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হাজীগঞ্জের সোহেল
একমাত্র ছেলের লাশটা দেখতে চায় বাবা-মা
মালয়েশিয়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় একমাত্র ছেলে সোহেল (২৫)কে হারিয়ে পাগলপ্রায় আনোয়ার হোসেন দম্পতি। একমাত্র সন্তানের লাশটা অন্তত শেষবারের মতো দেখতে চায় এই দম্পতি। সাড়ে ৮ মাসের কন্যা সন্তানের জনক সোহেল মালয়েশিয়া যাওয়ার মাত্র ৮ মাসের মাথায়ই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তিনি হাজীগঞ্জের ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দেবীপুর গ্রামের বশির মেম্বার বাড়ির আনোয়ার হোসেনের একমাত্র ছেলে। সোহেল চার বোনের একমাত্র ভাই। ৭ এপ্রিল রোববার রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
গতকাল সোমবার বিকেলে সরজমিনে সোহেলদের বাড়িতে গেলে দো-চালা বসতঘরের ভেতর ন্ত্রী শাহানারা বেগমের গগনবিদারী কান্নার শব্দ পুরো বাড়ির পরিবেশ ভারী করে তুলেছে। বাড়িতে প্রতিবেশী শত শত নারী পুরুষের ভিড়। আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে ভিড় করেছে। সোহেলের সাড়ে ৮ মাস বয়সী কন্যা সোহানাকে কোলে নিয়ে বাড়ির উঠোনে দাদা আনোয়ার হোসেন আর দাদী রোকেয়া বেগম বাকরুদ্ধ হয়ে বসে আছেন। দাদীর কোলে থাকা সোহানার এদিক সেদিক তাকানো ছাড়া আর কিছুই বোঝার বয়স হয়নি।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, সোহেল এসএসসি পাস করে ২০১৩ সালে। ভাগ্য বিড়ম্বিত সোহেল দেশে বেকার থাকার কারণে সম্প্রতি তাকে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে মালয়েশিয়া পাঠান তার বাবা। সোহেল মালয়েশিয়া যাওয়ার পুরো টাকাটা বিভিন্নজন থেকে হাওলাত আর বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন করে জমানো হয়েছে।
চাঁদপুর কণ্ঠের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় বাবা আনোয়ার হোসেন বুক চাপড়িয়ে বলেন, আমার সবকিছুই তো শেষ হয়ে গেলো। সরকারের কাছে আকুল আবেদন সরকার যেনো আমার ছেলের লাশটা দেশে আনার ব্যবস্থা করে দেয়। ছেলের লাশটা যেনো অন্তত নিজ বাড়িতে দাফন করতে পারি।
সোহেলের স্ত্রীর সাথে কথা বলা সম্ভব না হলেও গগনবিদারী চিৎকার করে সোহেলের স্ত্রী আমেনা বেগম বলেন, সর্বশেষ আমার সাথে যখন ওর কথা হয়, তখন আমাকে বলে আমি যেনো নিয়মিত নামাজ পড়ি। সে ডিউটিতে আছে, ডিউটি শেষে আমাকে ফোন দেবে। সে তো আর আমাকে ফোন দিলো না বলেই হাউমাউ করে বুক ফাটিয়ে যেনো কান্না জুড়ে দেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি লোটাস দেলোয়ার বলেন, সরকারের কাছে আমাদের এলাকাবাসীর আকুল আবেদন, সরকার যেনো সোহেলের লাশটা দেশের বাড়িতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে দেন।