• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

আজ থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ॥ চাঁদপুরে শিক্ষার্থী ১৯ হাজার ৯২৪, কেন্দ্র ৫২

প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে কোচিং সেন্টারগুলো কঠোর নজরদারিতে

প্রকাশ:  ০১ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও ২০১৯ সালের এইচএসসি, আলিম, বিএম ও এইচএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা আজ ১ এপ্রিল সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে। সকাল ১০টায় শুরু হয়ে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। চাঁদপুরে সর্বমোট ৫২ কেন্দ্রে ১৯ হাজার ৯২৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গত ১০ মার্চ জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে সকল উপজেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কলেজ ও মাদ্রাসার কেন্দ্র সচিব ও সহকারী সচিবদের সমন্বয়ে এইচএসসি, আলিম, বিএম ও এইচএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর জেলার ৫২টি কেন্দ্রে চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা ১৯ হাজার ৯শ' ২৪ জন।
জেলা প্রশাসনের শিক্ষা শাখা সূত্র মতে, জেলায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী সংখ্যা ১৪ হাজার ৬৩১ জন এবং কেন্দ্র ৩৩টি, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার্থী সংখ্যা ২ হাজার ৭৬১ এবং কেন্দ্র ১২টি, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা (বিএম) পরীক্ষার্থী সংখ্যা ২ হাজার ৩২৯ জন ও কেন্দ্র ৬টি এবং ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০৩ জন, কেন্দ্র ১ টি।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, এইচএসসি পরীক্ষায় চাঁদপুর সদরের ৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৩ হাজার ৭৯১ জন, হাজীগঞ্জের ৭টি কেন্দ্রে ২ হাজার ৬১৮ জন, শাহরাস্তির ৪টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৭ জন, মতলব দক্ষিণের ৩টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৭২২ জন, মতলব উত্তরের ৪টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৬৩৪ জন, ফরিদগঞ্জের ৪টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৭৬৯ জন, কচুয়ার ৫টি কেন্দ্রে ২ হাজার ২১৭ জন ও হাইমচরের ১টি কেন্দ্রে ৪৯৭ জন পরীক্ষার্থী।
এদিকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার মতো এইচএসসি পরীক্ষায়ও যাতে কোনোভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস না হয় সে লক্ষ্যে কঠোর উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এ ব্যাপারে আপসহীন ভূমিকায়। এতে সফল হতে যা যা করণীয় তাই করার উদ্যোগ নিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলাকালে প্রায় এক মাসব্যাপী তথা ১ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত সারাদেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সময়ও একই সিদ্ধান্ত নেয়ায় তার সফলতা পাওয়া গেছে। অর্থাৎ অন্যান্য বছরের ন্যায় এবার আর প্রশ্নপত্র  ফাঁসের ঘটনা ঘটেনি। শুধু কোচিং সেন্টার বন্ধই নয়, এর সাথে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো। যেগুলো কার্যকর করায় এবার আর এসএসসি পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেনি। সে আলোকে এইচএসসির সময়ও গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করলে এ পরীক্ষাটিও প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানোসহ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
    প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো এবং নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করার লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তসমূহ হচ্ছে : পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করে নির্ধারিত আসনে বসতে হবে। ‘অনিবার্য কারণে’ কোনো পরীক্ষার্থীর দেরি হলে রেজিস্ট্রারে নাম, ক্রমিক নম্বর ও দেরির কারণ উল্লেখ করতে হবে। দেরিতে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রতিদিন কেন্দ্র সচিব সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে পাঠাবেন। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমন একটি ফোন ব্যবহার করবেন, যা দিয়ে ছবি তোলা বা ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না। ট্রেজারি বা থানা থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-শিক্ষক-কর্মচারীরাও কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রশ্নপত্র বহনের কাজে কালো কাচের মাইক্রোবাস বা এ ধরনের কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। কোন্ সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হবে তার কোড পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানিয়ে দেয়া হবে।
পরীক্ষা চলাকালীন ১ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়ে চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মঈনুল হাসানের সাথে গত কদিন আগে এ প্রতিনিধির কথা হয়। তিনি জানান, ইতিমধ্যে সকল ইউএনওকে এ বিষয়ে বলে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সকল সেক্টর এ বিষয়ে সতর্ক এবং সজাগ রয়েছে। সকলকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সরকারের এ নির্দেশনা শতভাগ বাস্তবায়ন করতে চাঁদপুরের প্রশাসন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এসএসসি পরীক্ষার সময়ের চাইতেও এবার আমরা আরো বেশি কঠোর হবো। নামীদামী এবং বহুল প্রচারিত কোচিং সেন্টারগুলোর বাইরেও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার ভেতরে, বাসা-বাড়িতে যেসব কোচিং সেন্টার রয়েছে, সেগুলোতেও গোপনে আমাদের সোর্স কাজ করবে। ইতিমধ্যে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে আমরা ছোট-বড় সব কোচিং সেন্টারের তালিকা নিয়ে নিয়েছি। সরকারি নির্দেশনা কেউ অমান্য করলেই ব্যবস্থা। এ বিষয়ে কোনো ছাড় নেই।  অর্থাৎ সকল ধরনের কোচিং সেন্টার এই ১ মাস কঠোর নজরদারিতে থাকবে।