স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র থেমে ছিল না: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণনীতির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাকিস্তান মরুভূমির দেশ। আমাদের অর্থ দিয়ে মরুভূমিতে ফুল ফুটিয়েছিল পাকিস্তান। আর আমাদের দেশকে মরুভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিল তারা।
আজ মঙ্গলবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পাট-চা-তামাক বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতাম। আর সব নিয়ে যেতো পাকিস্তানিরা। পাকিস্তান রাজধানী পরিবর্তন করেছে বারবার। একটা ছিল করাচি, এরপর ইসলামাবাদ এরপর পিন্ডি। যতবার রাজধানী পরিবর্তন হয়েছে তার অর্থ আমাদের কাছ থেকে নিয়েছে। টাকা দিতে হতো আমাদের আর ভোগ করত তারা।
বাঙালিরা পাকিস্তানিদের চেয়ে এগিয়ে ছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের চিন্তা-চেতনা, খাদ্যাভ্যাস কোনও কিছুতেই পাকিস্তানিদের সঙ্গে আমাদের কোনও মিল ছিল না। শিক্ষা-দীক্ষা-সংস্কৃতি সবদিক থেকে আমরা উন্নত ছিলাম। সংখ্যাগরিষ্ঠের ওপর সংখ্যালঘিষ্ঠের বৈষম্য-শোষণ-নির্যাতনের সময় ছিল সেটি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের এই বৈষম্যনীতির অবসান ঘটাতে চেয়েছিলেন। অসহযোগ আন্দোলনকে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন বঙ্গবন্ধু।
স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে বাঙালি স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জিত হয়। ৯৬ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করে। এরপর বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর মিত্রবাহিনীকেও দেশে ফেরত পাঠান। এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মতো একজন স্বাধীনচেতা নেতা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মতো একজন নেতা ছিলেন বলে। বিশ্বের কোনও দেশে মিত্রবাহিনী যুদ্ধের পর ফেরত যায়নি, শুধু বাংলাদেশেই এটা সম্ভব হয়েছে।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশগঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে কাজ করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১২৬টি দেশ থেকে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি এনেছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচেষ্টায় প্রত্যেকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ পেয়েছে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র থেমে ছিল না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়। ব্যাংক লুট করা হয়, পাটের গুদামে আগুন দেয়া হয়।