• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-১৯

ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী

প্রকাশ:  ২৪ মার্চ ২০১৯, ১৩:২১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

আজ রোববার ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তোফায়েল আহম্মেদ ভূঁইয়া নামে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা নির্বাচন করায় এ নির্বাচন বেশ আলোচিত। স্বতন্ত্র পরিচয়ে এ প্রার্থী নিজে এবং তার এক সহযোগী প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো, তার উপর হামলার অভিযোগ, পুলিশ কর্তৃক তার অস্ত্র গুলিসহ জব্দ ইত্যাদি নানা ঘটনার কারণে ফরিদগঞ্জ উপজেলার নির্বাচন জেলাব্যাপী আলোচিত।
এদিকে স্বতন্ত্র এ প্রার্থী দীর্ঘ সময় ধরে এলাকায় না থাকায় তাকে অনেকেই চিনেন না। তারপরও দলের কিছু সংখ্যক লোক গোপনে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সহযোগিতা করছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে তিনি ধণাঢ্য হওয়ায় অনেক টাকা ছেড়ে নির্বাচনী মাঠকে ঘোলাটে করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আর নৌকার প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম রোমানের শক্তি হচ্ছে তাঁর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। তাঁর মরহুম বাবা সাবেক এমপি ও গণপরিষদ সদস্য অ্যাডঃ সিরাজুল ইসলামের ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং রোমান নিজের ক্লিন ইমেজের উপর ভিত্তি করে পুরো উপজেলায় তার পক্ষে একটি গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও রোমান এবং দলের নেতা-কর্মীরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে দুর্বল ভাবছেন না।
উপজেলার ১১৮টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ নয় হাজার সাতশ ছিয়াত্তর। তন্মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ সাতান্ন হাজার আটশত আট এবং মহিলা ভোটার এক লাখ একান্ন হাজার নয়শ আটষট্টি।  চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন তিন জন। এরা হলেন : আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তোফায়েল আহমেদ ভূঁইয়া (আনারস) ও এনপিপি প্রার্থী আব্দুল গণি (আম)।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নিরন্তর মাঠে ছুটে চলেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান। অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা শেষে গত ১৫ মার্চ এলাকায় আসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তোফায়েল আহাম্মেদ ভূঁইয়া। তিনি দলীয় কোনো প্রার্থী না হওয়ায় এবং তাঁর নিজস্ব কর্মী-সমর্থক তেমন একটা না থাকায় তিনি প্রচার-প্রচারণায় তেমন সুবিধা করতে পারেন নি। তবে ১৬ মার্চ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর লাইসেন্সকৃত শর্টগান থেকে দুই রাউন্ড গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ সময় সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন আহত হয়। ঘটনার দুদিন পর থানা পুলিশ লাইসেন্সকৃত শর্টগান ও ৪৩ রাউন্ড গুলি জব্দ করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছ থেকে। এসব ঘটনায় পুরো জেলায় ফরিদগঞ্জের নির্বাচন আলোড়ন সৃষ্টি করে।
এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন গত ২১ মার্চ ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হারুনুর রশিদ চৌধুরীকে প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেয়। এদিকে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী এনপিপি প্রার্থীর প্রচারণা নেই বললেই চলে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে শেষ হয়েছে প্রচারণা। এখন অপেক্ষা ভোটগ্রহণের। ইতিমধ্যেই প্রশাসন শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ১১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৯৫টি কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাখায়িত করে উচ্চ আদালতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা দাবি করে রিট করলে আদালত গত ২১ মার্চ নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাগ্রহণের নির্দেশনা দেয়। এ ব্যাপারে প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুষ্ঠু এবং অবাধ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করলে এবং জনগণ ভোট দিতে পারলে তার জয় নিশ্চিত।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের তরুণ প্রজন্মসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে জনপ্রিয় নেতা অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান জয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তার ভাই জেলা পরিষদ সদস্য সাইফুল ইসলাম রিপন বলেন, আওয়ামী লীগের উন্নয়ন, দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধতা এবং দলের বাইরে অন্য দলের কাছেও তার ক্লিন ইমেজের কারণে তারাও আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ভোট দিবে। তাই বড় বিজয় প্রত্যাশা করছেন তারা। দুই প্রার্থীর প্রত্যাশা এবং পরস্পরের প্রতি অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের কারণে ফরিদগঞ্জের ভোটের মাঠ বেশ সরগরম। ফলাফল এবার যাই হোক। তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ের দ্বারপ্রান্তে বলা যায়।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।  ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন হলেন : উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান রানা (টিয়া পাখি), প্রজন্মলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আবু সুফিয়ান (চশমা), ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক জিএস তছলিম আহমেদ (বই), সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বাবু (মাইক), উপজেলা যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সবুজ (তালা), যুবলীগ নেতা পাবেল হোসেন পাটওয়ারী (উড়োজাহাজ) ও এনামুল হক খোকন পাটওয়ারী (টিউবঅয়েল)।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী সেলিনা আক্তার (প্রজাপতি), মাজেদা বেগম (ক্যামেরা), উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হালিমা বেগম (পদ্ম ফুল), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিয়ষক সম্পাদক রিনা নাসরিন (হাঁস), যুব মহিলা লীগের নেত্রী রেহানা আক্তার (পদ্মফুল) এবং বিএনপি নেত্রী সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেবেকা সুলতানা (কলস)।

 

সর্বাধিক পঠিত