সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম অ্যাডঃ সিরাজুল ইসলামের পুত্র রোমান এবার নৌকার মাঝি
ফরিদগঞ্জের সর্বত্র আনন্দের বন্যা
ফরিদগঞ্জের মানুষ এবার নৌকার মাঝি হিসেবে পেয়েছেন তাদের প্রিয় নেতা অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমানকে। তাই ফরিদগঞ্জের সর্বত্র এখন শুধু আনন্দ আর আনন্দ। সকল বয়সী ও সকল শ্রেণী পেশার মানুষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রোববার ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমানকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে। সবচেয়ে বড় আয়োজনে মিছিলটি হয়েছে উপজেলা সদর পৌর এলাকায়। এ মিছিলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন। দলীয় নেতা-কর্মীর বাইরে সাধারণ মানুষদেরও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে আনন্দ মিছিলে।
চাঁদপুর জেলায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং আওয়ামী রাজনীতিতে অ্যাডঃ সিরাজুল ইসলাম নামটি বেশ পরিচিত। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং গণপরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বেশ দক্ষতার সাথে। দলের ক্রান্তিকালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত অ্যাডঃ সিরাজুল ইসলাম চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। চাঁদপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে একজন সৎ ও আদর্শবান রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত অ্যাডঃ সিরাজুল ইসলাম চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির বেশ ক’বার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।
সাবেক এই সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠকের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান আসন্ন ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। গত শনিবার দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় ফরিদগঞ্জসহ চাঁদপুর জেলার সাতটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়। শনিবার রাতেই ‘রোমান নৌকা পেয়েছেন’ এ খবর ফরিদগঞ্জসহ পুরো জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। সাত উপজেলার মধ্যে ফরিদগঞ্জের বিষয়টি বেশ আলোচিত ছিলো। কারণ, জাহিদুল ইসলাম রোমান রাজনীতির দুর্যোগকালীন সময়ে চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন এবং বিগত প্রায় দুই যুগ চাঁদপুর জেলার বিশেষ করে চাঁদপুর সদর ও ফরিদগঞ্জে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনকালীন সময়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় জেলাবাসীর কাছে এ নামটি বেশ আলোচিত। বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের দুঃসময়ে এবং ওয়ান ইলেভেন সরকারের ক্রান্তিকালে জাহিদুল ইসলাম রোমান চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী রাজনীতির দীর্ঘ এই দুঃসময়ে রোমান চাঁদপুর জেলায় ছাত্রলীগকে বেশ দক্ষতার সাথে নেতৃত্ব দেন। বিএনপি-জামাত জোট সরকার বিরোধী প্রত্যেক আন্দোলন-সংগ্রামে রোমান রাজপথে সরব উপস্থিত থেকে অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদের ধারাবাহিকতার দীর্ঘ সময়ে রোমান দলের মুখ্য কোনো পদ-পদবীতে না থেকেও তার ব্যক্তি ইমেজ এবং গ্রহণযোগ্যতার কারণে আওয়ামী রাজনীতিতে তার প্রভাব এবং নেতৃত্ব ছিলো চোখে পড়ার মতো। তাই ‘জাহিদুল ইসলাম রোমান’ নামটি জেলাবাসীর কাছে বেশ পরিচিত। আর ফরিদগঞ্জের সর্বত্র তো তাঁর ব্যাপক পরিচিতি রয়েছেই। তার মরহুম পিতার ক্লিন ইমেজ এবং নিজের চৌকস নেতৃত্বের গুণে ফরিদগঞ্জের আপামর জনতার কাছে জাহিদুল ইসলাম রোমান খুবই জনপ্রিয়। সেই জাহিদুল ইসলাম রোমান এবার ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকার মাঝি হিসেবে দলের টিকেট পেয়েছেন সে জন্যে উপজেলাব্যাপী আনন্দ ও উচ্ছ্বাস। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে গতকাল রোববার।
অ্যাডঃ মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম রোমান গতকাল রোববার দুপুরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত দলীয় মনোনয়নের চিঠি গ্রহণ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে ফরিদগঞ্জে আনন্দ মিছিল করেছে বৃহত্তর আওয়ামী পরিবারের অসংখ্য নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। কয়েক হাজার নেতা-কর্মী জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর সামনে থেকে মিছিল বের করে উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লোকমান তালুকদার, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ এম তবিবুল্লাহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন স্বপন, আরিফুর রহমান আজাদ, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সামাদ মিন্টু পাটওয়ারী, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মিজি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ মশিউর রহমান মিটু, জেলা পরিষদের সদস্য ও পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম রিপন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও ফরিদগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন, জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ২নং বালিথুবা পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম হারুনুর রশিদ, ৭নং পাইকপাড়া উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান আলী আক্কাছ ভূঁইয়া, ৮নং পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী বিএসসি, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কামরুজ্জামান সবুজ, ১০নং গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক অহিদুর রহমান ভূঁইয়া, ১১নং চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন বাচ্চু, ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সোহেল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন মিঠু, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব রহমান পাটওয়ারী, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ রাসেল, পৌর কাউন্সিলর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুজিবুর রহমান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিএস তছলিম আহমেদ, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি হানিফ কাজী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসারুল আলম কামরুল, উপজেলা যুবলীগের সদস্য রুহুল আমিন রুবেল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন মিন্টু, আলী হায়দার উজ্জ¦ল মেম্বার, মাহিন মেম্বার, রাসেল মেম্বার, বাচ্চু মেম্বার, প্রজন্ম লীগের সভাপতি টিটু, সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।
এছাড়া উপজেলার ৩নং সুবিদপুর, ৫নং গুপ্টি পূর্ব, ৬নং গুপ্টি পশ্চিম, ৭নং পাইকপাড়া দক্ষিণ, ৮নং পাইকপাড়া পূর্ব, ৯নং গোবিন্দপুর উত্তর, ১০নং গোবিন্দপুর দক্ষিণ, ১২নং চরদুঃখিয়া পূর্ব এবং ১৬নং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে আনন্দ মিছিল করার খবর পাওয়া গেছে। এসব ইউনিয়নের প্রধান প্রধান বাজারসহ জনবহুল এলাকায় জাহিদুল ইসলাম রোমানকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করেন নেতা-কর্মীরা। প্রতিটি মিছিলে দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, আগামীকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন। ২৮ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহারের শেষদিন ৭ মার্চ এবং ২৪ মার্চ ভোটগ্রহণ।