আজ মন্ত্রিসভার শপথ
ডাঃ দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী
চাঁদপুরের গর্ব, চাঁদপুরের অহঙ্কার সাবেক সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি আজ পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন। তাঁকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাই আজ তিনি শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন।
আজ ৭ জানুয়ারি সোমবার বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদে আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু হবে মন্ত্রিসভার শপথের মধ্য দিয়ে। আজ বিকেল সাড়ে তিনটায় বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীসহ মোট ৪৬ সদস্যের মন্ত্রিসভায় চাঁদপুর জেলা থেকে একমাত্র ঠাঁই পেয়েছেন চাঁদপুর-৩ (সদর ও হাইমচর) আসন থেকে পর পর তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ডাঃ দীপু মনি। তিনি ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রথমেই মন্ত্রীত্ব পান। আর সেটি হচ্ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সরকারের পূর্ণ মেয়াদে তথা পাঁচ বছরই তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব অত্যন্ত ন্যায়-নিষ্ঠার সাথে পালন করেছেন। এরপর এবার তিনি হলেন শিক্ষামন্ত্রী। দুটাই দেশের রাজনীতির ইতিহাসে বড় ধরনের চমক। শুধু বাংলাদেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন ডাঃ দীপু মনি। এবার হলেন শিক্ষামন্ত্রী। এটিও এ প্রথম কোনো নারী সংসদ সদস্যের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো অতীব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া।
সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত : ডাঃ দীপু মনির জন্ম ৮ ডিসেম্বর, ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে। তিনি একজন বাংলাদেশী নারী রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভের পর বাংলাদেশের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ডাঃ দীপু মনি নিয়োগ পান। এরপর তিনি ২০১৪ সালে গঠিত দশম সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে তিনি পুনরায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বর্তমান একাদশ সংসদে ডাঃ দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান।
প্রাথমিক জীবন : দীপু মনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের প্রথম কাউন্সিলে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এমএ ওয়াদুদের কন্যা। তিনি হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং বাংলাদেশ জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে তিনি এলএলবি পড়েন। এমবিবিএস ডিগ্রি লাভের পর মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পাবলিক হেল্থ থেকে এমপিএইচ ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমঝোতা ও দ্বন্দ্ব নিরসনের ওপর একটি কোর্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের একজন আইনজীবী।
ডাঃ দীপু মনি চাঁদপুর-৩ আসনের পর পর তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়- প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি কমনওয়েলথ মিনিস্ট্রিয়াল অ্যাকশন গ্রুপ-এর প্রথম নারী এবং দক্ষিণ এশীয় চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন। এছাড়া তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমুদ্র জয় করে। এতে করে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার এবং ভারতের সাথে প্রায় চার দশকের সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় চূড়াান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়।
ব্যক্তিগত জীবন : বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট তৌফীক নাওয়াজ দীপু মনির স্বামী। তিনি আন্তর্জাতিক একটি ল’ফার্মের প্রধান। তিনি উপমহাদেশের দু হাজার বছরের ঐতিহ্যম-িত ধ্রুপদী সঙ্গীতের উৎস হিসেবে পরিচিত ‘আলাপ’ এর একজন শিল্পী। তাঁদের রয়েছে দু সন্তান। পুত্র তওকীর রাশাদ নাওয়াজ ও কন্যা তানি দীপাভলী নাওয়াজ।
পুরস্কার ও সম্মাননা : মাদার তেরেসা আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেন ডাঃ দীপু মনি এমপি। তথ্য সূত্র : উইকিপিডিয়া।