• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর সদর ও হাইমচরবাসীর প্রতি ডাঃ দীপু মনির আহ্বান

নৌকায় ভোট দিয়ে সকল মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রের জবাব দিন

প্রকাশ:  ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৯:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

নৌকায় ভোট প্রদানের মধ্য দিয়ে বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের জবাব দিতে চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের প্রত্যেক ভোটারের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনে নৌকার প্রার্থী আলহাজ¦ ডাঃ দীপু মনি। ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের সম্প্রতি বিবৃতি প্রসঙ্গে চাঁদপুর পোস্টের পক্ষ থেকে ডাঃ দীপু মনির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে বিবৃতিসহ ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার জনগণ ও ভোটারদের প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছেন তা নি¤œরূপ :
আমার প্রাণপ্রিয় ও সম্মানিত ভোটার ভাই ও বোনেরা,
আপনারা আমাকে টানা দশটি বছর দেখেছেন, চিনেছেন এবং বুঝেছেন। আমি আপনাদের একজন পরীক্ষিত সেবক। দশটি বছর আপনাদের সেবা করার জন্যে আমি দিন-রাত নিরলস পরিশ্রম করেছি। মহান রাব্বুল আলামীনের অশেষ কৃপায় এবং আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায় চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। এই দশ বছরের উন্নয়নের মহাযজ্ঞে চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের চেহারা পাল্টে গেছে। মেঘনার ভাঙ্গনের হাত থেকে চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের মানুষকে এবং তাদের সম্পদ রক্ষা করতে আমি যে ওয়াদা করেছিলাম তা পূরণে ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করেছি। অতীতের তিন দশক যাবৎ নির্বাচিত অন্যান্য এমপিরা কেউই আপনাদেরকে দেয়া তাদের এ ওয়াদা তারা রক্ষা করেননি। আমি সকল ওয়াদা পালন করেছি আল্লাহর অশেষ রহমতে। মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতিসহ সর্বক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। সামনে আরো মহাপরিকল্পনা রয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে হাইমচরে সাড়ে দশ হাজার একর আয়তনবিশিষ্ট বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় আছে। যার জন্যে ব্যয় হবে আনুমানিক ৫০ হাজার কোটি টাকা। এই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি হয়ে গেলে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
সম্মানিত ভোটারগণ,
চাঁদপুরে একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিলো এ জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের। তবে এটাও বিশ^াস ছিলোÑশেখ হাসিনার সরকারের দ্বারাই এটা সম্ভব এবং একটা সময় এটা চাঁদপুরে হবেই। কিন্তু এই মেডিকেল কলেজ যে চাঁদপুরে এতো দ্রুততার সাথে বাস্তবায়ন হয়ে যাবে তা হয়তো অনেকে ভাবেনও নি। চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ১ম বর্ষে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়ে আগামী ১০ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হবে। মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ভবন/ক্যাম্পাসটি হবে চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ সেতুর (গাছতলা ব্রিজ) দক্ষিণ প্রান্তে মেরিন একাডেমির পূর্ব পাশে। সহসাই সেখানে কাজ শুরু হবে। এখানে মেডিকেল কলেজ পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে চাঁদপুরসহ আশপাশের জেলার মানুষকে আর উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকা যেতে হবে না।
দেড়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে চাঁদপুরে আধুনিক নৌ-বন্দর নির্মাণ এখন প্রক্রিয়াধীন। এর জন্যে  প্রথম ধাপে ৬৮ কোটি টাকার কাজ হবে। এ কাজও সহসা শুরু হবে। ইতোমধ্যে নৌমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এ নৌবন্দরটি হয়ে গেলে চাঁদপুরের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন ঘটবে। শুধু তাই নয়, চরাঞ্চলের মানুষদের চিকিৎসায় ভাসমান হাসপাতাল করার পরিকল্পনা রয়েছে। আরো রয়েছে পর্যটন এরিয়া গড়ে তোলার পরিকল্পনা। স্থাপিত হবে হাইটেক পার্ক।
তরুণদের জন্যে শুধু ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি আমরা তাই নয়, আগামীতে তাদের সকল সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের জন্যেও কাজ করবে আওয়ামী লীগ সরকার। কারণ তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। এককথায় চাঁদপুরকে মনের মতো করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। আর এসব মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন আগামীতে আওয়ামী লীগের পুনরায় সরকার গঠন করা। সেজন্যে প্রত্যেক ভোটারকে নৌকা মার্কায় একটি করে ভোট দিতে হবে। আমাকে নৌকা মার্কায় বিপুল ভোটে বিজয়ী করে পুনরায় আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন আশা করি। আপনারা অবশ্যই এ সুযোগটি আমাকে দেবেন, এ আমার দৃঢ় বিশ^াস।
প্রিয় চাঁদপুর সদর ও হাইমচরবাসী,
আপনারা জানেন ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ^াসী নই। ভিন্ন মতের মানুষের উপর কখনো আমার অথবা আমার দলের পক্ষ থেকে অন্যায় আচরণ করা হয়নি। অথচ সেটির পুরস্কারস্বরূপ আমার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-জামাত তথা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর কাছ থেকে সেদিন কী পেলাম তা আপনারা দেখেছেন। গত ২৪ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরের ঘটনা। আমি ছিলাম সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নে গণসংযোগে। আমার বাসায় তখন আমাদের নেতা-কর্মী তেমন কেউ ছিলো না। বাসার নীচে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ১৬/১৭ জন বসে নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায় ছিলো। এ সময় ধানের শীষের প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক তার নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিছিল করে এসে আমার বাসায় হামলা চালিয়েছে। আমার দলের প্রায় ৩০ জন নেতা-কর্মীকে রক্তাক্ত জখম করেছে। তার বিবেকের কাছে প্রশ্ন-আমি তার প্রতিবেশী, সেদিন তার বুক একটুও কাঁপলো না প্রতিবেশীর বাসায় হামলা চালাতে? প্রতিবেশীর কাছে প্রতিবেশীই যদি নিরাপদ না থাকে তাহলে তার কাছে চাঁদপুরবাসী নিরাপদ থাকবে কীভাবে? তার কাছে প্রশ্নÑএটা কোন্ রাজনীতি? সন্ত্রাস চালিয়ে, নিজের বাড়িকে সন্ত্রাসীদের আড্ডাখানায় পরিণত করে কখনো রাজনীতির মতো সর্বোত্তম মানবসেবা করা যায় না। আরো অবাক করার বিষয় হচ্ছেÑসেদিন শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কায়দায় আমার বাসায় হামলা চালানো হলো। অথচ তিনি প্রতিদিন পত্রিকায় একটার পর একটা মিথ্যা বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন।
প্রিয় ভোটার ভাই ও বোনেরা,
এই বিজয়ের মাসে স্বাধীনতার পক্ষে আপনার ভোটটি দিন। আপনারা কোনো মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবেন না। কোনো অপপ্রচার ও গুজবে কান দেবেন না। আমার দৃঢ় বিশ^াস, সকল মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আপনারা প্রত্যেকে দল-মত নির্বিশেষে আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। আপনাদের দীপু মনি তার সকল ওয়াদা পালন করেছেন। ওয়াদার চেয়েও অনেক বেশী কাজ করেছেন। আপনাদের ভোটের মর্যাদা রক্ষা করেছেন। আপনাদের সম্মান সুনাম অক্ষুণœ রেখেছেন। আপনাদের দীপু মনির কোনো দুর্নাম বা বদমান নেই। তাই আপনাদের দোয়া ও সমর্থন প্রত্যাশা করছি। আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ, আপনাদের মূল্যবান ভোটটি দিয়ে আমাকে আপনাদের সেবা করার আবারও সুযোগ দিবেন। আল্লাহ আমাদের সকলের মঙ্গল করুক।
আপনাদের সেবক
আলহাজ¦ ডাঃ দীপু মনি
সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, চাঁদপুর-৩।