হাইমচর উপজেলার দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় ডাঃ দীপু মনি
নৌকায় ভোট দিলে দেশের মানুষ না খেয়ে থাকে না
চাঁদপুর-৩ (সদর ও হাইমচর) সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী আলহাজ¦ ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, ১০ বছর আগে হাইমচর এসে আপনাদের চোখে মুখে আর্তনাদ দেখেছি। নদী ভাঙন মানুষকে কতটা নিঃস্ব করে দেয় তা আমি চোখের সামনে দেখেছি। সে সময় যাকেই জিজ্ঞেস করেছি, বাবা আপনার বাড়ি কোথায়? মেঘনা নদীর দিকে হাত উঠিয়ে বলতো ওই নদীর মাঝখানে ছিলো। অনেকের বাড়ি তিন চারবার করে ভেঙেছে। সে সময় আমাকে তা ভীষন কষ্ট দিয়েছে। আমি তখনই প্রতিজ্ঞা করি, নদী ভাঙনের শিকার মানুষের জন্য স্থায়ী কিছু একটা করতে হবে। আজ ১০ বছর পরে হাইমচরবাসীর সেই অবস্থা নেই। নদী ভাঙন রোধ হওয়ায় আপনারা এখন নিরাপদে রাতে ঘুমাতে পারছেন।
বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে হাইমচর উপজেলার ২নং আলগী উত্তর ইউনিয়নের দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমার আগেও ৩৫ বছর পর্যন্ত বহু এমপি মন্ত্রী ওয়াদা করেছে কিন্তু কিছুই করেনি। তারা সে সময় কাজ করলে হাজার হাজার একর জমি নদী গর্ভে হারাতো না। হাজার হাজার পরিবারবে বসত ভিটা ও বাড়ি হারাতে হতো না। তারা ওয়াদা রক্ষা করেনি, তারা কি নিজেদের মানুষ বলে দাবী করতে পারে! যেহেতু তারা ওয়াদা রক্ষা করেনি তারা আবার কোন মুখে ভোট চাইছে।
‘বিএনপির প্রার্থীর খাদ্য গুদামের ৫ একর জমির প্রাসাদগোম বাড়ি চাঁদপুরে সন্ত্রাসের আড্ডাখানা। আমার বাড়িতে হামলা করার উদ্ধ্যত দেখায়। প্রশাসনকে বলবো এদের দমন করুন। আমাদের নিরবতাকে দুর্বলতা মনে করবেন না। আমরা শান্তিতে বিশ^াসী।’
দীপু মনি বলেন, আয়ামী লীগ কল্যাণকর পার্টি। দেশের সকল জনগণের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছে। নৌকায় ভোট দিলে দেশের মানুষ না খেয়ে থাকে না, সকল ধরনের ভাতা পায়, কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩২ রকমের ফ্রি ওষুধ পায়, বছরের প্রথমে শিক্ষার্থীরা নতুন বই পায়, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পায়। আর বিএনপি সকল অকল্যানকর কাজের হোতা। তারা মানুষ পুড়িয়ে মারে, আগুন সন্ত্রাস করে, যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী ও এমপি বানায়।
তিনি বক্তব্যে আরো বলেন, আপনাদের ভোটের মর্যাদা রক্ষা করে বিগত দশটি বছর আপনাদের সেবায় নিয়োজিত ছিলাম। ২০০৮ আপনাদের প্রথম চাওয়াছিল নদী ভাঙ্গন রোধ। সে সময় আপনারা বলেছিলেন আগুনে পুড়লে ভিটাটা অন্তত থাকে, নদীতে ভাঙ্গলে কিছুই থাকে না, বাপ মায়ের কবরখানা ও চলে যায়। তাই আপনাদেকে কথা দিয়ে আমি ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ স্থায়ী বাঁধের ব্যাবস্থা করেছি। গ্রামীন সড়কগুলো পাকা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অবকাঠামগত উন্নয়ন হয়েছে। হাইমচরে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার মহা পরিকল্পনা হয়েছে। তাই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দিন। তাহলে অসম্পূর্ন যে ছোট খাটো কাজ বাকী রয়েছে তা সম্পন্ন করা হবে।
হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতালেব জমাদারের সভাপতিত্বে ও যুবলীগের আহবায়ক জাহাঙ্গীর বেপারীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ও হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারী, সাবেক চেয়ারম্যান শাহাজাহান পেদা, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হোসেন মাস্টার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এম এ বাশার, হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী, দপ্তর সম্পাদক মাসুদ আলম খান, মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে ডেপুটি কমান্ডার হাফিজ আহমেদ মাস্টার।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ২নং আলগী উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল পাটওয়ারী, ইউপি সদস্যদের পক্ষে আহমেদ আলী মাস্টার, আওয়ামী লীগ নেতা টিটু হাওলাদার, হাইমচর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক কামরুল ইসলাম, এস এম আল মামুন, যুবলীগের সাবেক সভাপতি আতিকুর রহমান পাটওয়ারী, ফখরুদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছাত্তার গাজী, জহিরুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী আনজুমান লায়লা ও ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম রনি প্রমূখ।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক জাফর ইকবাল মুন্না, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতাউর রহমান পারভেজসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, শ্রমীকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। জনসভায় হাজার হাজার জনতা ডাঃ দীপু মনি এমপির বক্তব্য শুনার জন্য উপস্থিত হন।